সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যা যা করণীয় ২০২৪

second hand laptop

দিনে দিনে প্রযুক্তি এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে যে তা বলার মতো কোনো অবকাশ নেই। ভবিষ্যতের প্রযুক্তি এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছবে, যার এক পর্যায়ে আমরা এতটাই প্রযুক্তিনির্ভর হব যে একটি মুহূর্ত আমরা প্রযুক্তিকে ছাড়া চলতে পারব না। আপনারা হয়ত ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি খেয়াল করেছেন।

প্রযুক্তির অসামান্য একটি অবদান হচ্ছে কম্পিউটার, বর্তমানে কম্পিউটার দিয়ে এমন কোন কাজ নেই যা করা হচ্ছে না। এই কম্পিউটার ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যেই অনেক বড় বড় গাণিতিক সমস্যা থেকে শুরু করে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও কেউ কেউ এই কম্পিউটারকে নিজের ইনকামের একমাত্র পুঁজি হিসেবে দেখছেন। তাই দিনে দিনে এই কম্পিউটারে চাহিদা বেড়েই চলেছে।

অনলাইন কিংবা অফলাইন আবার ধরুন শহর বা মফঃস্বলে বাইরে থেকে আনা ব্যবহৃত ল্যাপটপ (Used laptop) বা পুরনো ল্যাপটপ এর দোকান থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন এবং বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা দেখতে পাওয়া যায়। 

এর মধ্যে রয়েছে একটি Customer-base, তেমনি প্রতিনিয়তই এইসব প্রচার প্রসার এর সাথে প্রয়োজন মিলে যাওয়ায় এবংদামে কম হওয়ায় অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন এই ব্যবহৃত ল্যাপটপগুলো কেনার ব্যাপারে বা কেনার আগে এগুলো সম্পর্কে খুটিনাটি যে সমস্তবিষয়গুলো আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। 

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে ল্যাপটপ গুলো কাদের জন্য, এগুলোর কন্ডিশন কেমন থাকে, কেনার আগে কি কি জিনিস অবশ্যই চেক করা উচিত, কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর, এই ল্যাপটপ গুলোর সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট, 

যে বিষয়গুলো অবশ্যই জানা উচিত ক্রেতার, সম্ভাব্য যেসব ফাঁদ রয়েছে এই সেক্টরে, কিনলে কি কি বিষয়ে Sacrifice করা লাগতে পারে ইত্যাদি গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে দেরি না করে যেনে দেওয়া যায় এই সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনার আগে কোন কোন বিষয়ে আপনাকে খেয়াল রাখা অত্যাবশ্যকীয়।

যেসব বিষয় থাকছেঃ 

  1. -সাধারণ আলোচনা
  2. -কেনার আগে যা যা জেনে নিবেন।
  3. -কেনার সময় যা যা চেক করবেন।
  4. -এই ল্যাপটপগুলোর কন্ডিশন কেমন থাকে ও ল্যাপটপগুলোর কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট।
  5. -রিস্ক ফ্যাক্টর ও যে যে বিষয়ে স্যাক্রিফাইস করা লাগতে পারে ক্রেতার।
  6. -কাদের জন্যঃকারা কিনবেন? কারাই বা কিনবেন না?

সাধারণ আলোচনাঃ

এই ল্যাপটপগুলো সাধারণত বাইরে থেকে লাগেজে করে আসে। এই সমস্ত ল্যাপটপের থাকে না কোনো কাগজপত্র। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাগ প্রোভাইড করে দোকানগুলো,কিছু ক্ষেত্রে করে না। তাদের মতে এগুলো বাইরের দেশে মিন্ট কন্ডিশনে কিছুদিন ইউজড ল্যাপটপ। এই ল্যাপটপগুলোর ক্ষেত্রে সচরাচর জেনারেশন বেশ পুরনো হয়ে থাকে।

সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ ক্রয় করার আগে যা যা জানা প্রয়োজনঃ 

দোকান সিলেকশনঃ

আপনি যখন একটি সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কিনবেন ভাবছেন কিনা প্রয়োজন হয়তো আপনি ঠকবেন কি জিতবেন, আদৌ টাকা দিয়ে প্রোডাক্ট পাবেন কি না, পেলেও সেটা ভালো হবে না খারাপ তার একটি বড় অংশ নির্ভর করছে আপনি কোন শপ থেকে নিচ্ছেন সেটির উপর এবং আপনার ভাগ্য কতটুকু ভালো। নিরাপদ থাকার জন্য এবং একটি ভাল মানের প্রোডাক্ট কালেকশনের জন্য বা ঝুকি এড়ানোর জন্য যতটুকু সম্ভব খোজ খবর নেওয়া উচিত।

প্রথমত-

যতটুকু সম্ভব আপনার পরিচিত আত্মীয়/বন্ধু/প্রতিবেশীর মধ্যে কেও কিনেছে কি না এরকম ল্যাপটপ সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করুন।এরকম কিছু জানলে বা কেউ কিনে থাকলে, তার ল্যাপটপটি সম্ভব হলে ঘেটে দেখুন। 

এরপর যদি আপনার পছন্দ হয় তাহলে পছন্দ হলে দোকান সম্পর্কে জানুন।দোকান যত জনপ্রিয়,পুরনো,সেটি তত বিশ্বস্ত ও ভালো হওয়ার কথা। হুট করে নতুন অচেনা কারো থেকে কেনা,ডিল করা,যাচাই বাছাই না করে কেনার মত ভুল কাজ করবেন না। 

আর হ্যাঁ অবশ্যই পারলে নিজ এলাকার মধ্যে Physical দোকান খোজার চেষ্টা করুন। কেও যদি কোনো পজিটিভ রিভিউ দেয় বা কোনো দোকান সাজেস্ট করলে একবারে বিশ্বাস না করে বরং সে সেই দোকান থেকে কিনেছে কি না, সম্ভব হলে দোকান স্বশরীরে ভিজিট করে যাচাই করুন।

মনে রাখবেন এই সেক্টরে আপনি ভালো দোকান/ইম্পোর্টার এর সন্ধান ও পেতে পারেন, অচেনা অজানা প্রতারক দ্বারা প্রতারিত ও হতে পারেন।

অনলাইন পেজ সম্পর্কে সতর্কতাঃ

আপনারা অবশ্যই পারতপক্ষে এই ফেসবুক ক্রয়-বিক্রয় পেজ গুলো এড়িয়ে চলুন। কেননা এই সমস্ত পেজগুলো থেকে অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন যা খুবই হতাশাজনক।

দ্বিতীয়তঃ- 

ল্যাপটপ হাতে পাবার আগে পেমেন্ট একদমই করবেন না। এক্ষেত্রে আপনি ডিফেক্টেড/সমস্যা যুক্ত ল্যাপটপ পেতে পারেন, একদমই নষ্ট ল্যাপটপ পেতে পারেন। এমনকি ভাগ্য খারাপ হলে/প্রতারক চক্রের হাতে পড়লে প্রোডাক্ট নাও পেতে পারেন/ব্লক এর শিকার হতে পারেন।

পেমেন্ট করার ক্ষেত্রে অচেনা অজানা শপ তো বটেই, অপরদিকে reputed shop এও আগে পেমেন্ট করবেন না। বরং USED Laptop এর ক্ষেত্রে কুরিয়ারে কন্ডিশনেও নিতেও নিষেধ করবো আমি। কারণ এক্ষেত্রেও আপনার কোনো গ্যারান্টি থাকছে না আপনি কি পাচ্ছেন প্যাকেটের মধ্যে। তাই আমার মতে স্বশরীরে দোকান ভিজিট করে সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনাই উত্তম।

আবার অনেকেই ইনবক্সে ছবি,ভিডিও দিলেই যে সেটি শতভাগ সত্যি, এমনটা কিন্ত মনে করা উচিত নয়। এরকম ছবি,ভিডিও পেলেও সতর্ক থাকবেন,কারণ আজকাল ইন্টারনেট থেকে ভিডিও/ভিডিওর অংশবিশেষ,ছবি কালেক্ট করে দেওয়া খুবই সহজ।

আপনি যদি ফেসবুক পেজ থেকে কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করতে চান তাহলে অবশ্যই নতুন পেজ গুলো এড়িয়ে চলবেন এবং পেজের কতদিন বয়স সেই বিষয়টিও মাথায় রাখবেন, পেজ ভালো মত ঘুরে দেখুন।পজিটিভ কমেন্ট,রিভিউ সেকশনের আইডিগুলোও ভালোমত স্টক করা জরুরি। কেননা, নিজেদের অনেকগুলো ফেক আইডি দিয়ে পজিটিভ কমেন্ট,রিভিউ লিখিয়ে নেওয়া খুবই পরিচিত একটি স্ট্রাটেজি।

ওয়ারেন্টি পলিসি-Service warranty এর আসল কাহিনীঃ

আপনি যখন এই সমস্ত প্রোডাক্ট কিনবেন তখন অবশ্যই এই ধরনের প্রোডাক্ট কেনার আগে এগুলোর ওয়ারেন্টি পলিসি সম্পর্কেও ভালোমত ধারণা থাকতে হবে। মোটামুটি বাংলাদেশে যতগুলো সোর্স থেকে,যত গুলো চক্র/সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে এই ল্যাপটপ গুলো আসে বা যতগুলো দোকান সেল করে। 

এগুলো প্রত্যেকটারই ওয়ারেন্টি পলিসি প্রায় একই রকম। তা হলোঃ এক বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি, ৭ দিনের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি।

এক বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি শুনে পাঠক হয়তো খুশি হতে পারেন যে বাহ ভালো তো;পুরাতন ল্যাপটপেও এক বছর ওয়ারেন্টি পাচ্ছি খুবই ভালো কথা। কিন্ত এখানে একটি বিষয় আছে, সার্ভিস ওয়ারেন্টিকে অনেকেই যা ভেবে থাকেন, একে রিপ্লেসমেন্ট/পার্টস ওয়ারেন্টি এর সাথে মিলিয়ে ফেলেন। 

প্রকৃতপক্ষে সার্ভিস চার্জ বলতে বোঝানো হয় উক্ত ওয়ারেন্টি পিরিয়ডে প্রোডাক্ট এর কোনো পার্টস নষ্ট হলে ,কোনো পার্টস সারানো দরকার হলে,এসেম্বলি, Disassembly, cleaning, কোনো পার্টস লাগাতে হলে দোকান এই disassembly,সারিয়ে দেওয়া,রিপেয়ার করা, disassembly, cleaning ইত্যাদি বাবদ কোনো টাকা নেবে না, কিন্ত যেকোনো পার্টস নষ্ট হলে/রিপ্লেস,নতুন লাগাতে হলে তার দাম ঠিকই ক্রেতাকেই বহন করতে হবে।

আপনি যদি এখনো না বুঝে থাকেন তাহলে সহজ কথায় সার্ভিস ওয়ারেন্টি বলতে সারানোর মজুরি যেটা,সেই চার্জ কেই বুঝানো হয়। অর্থাৎ ওই সময়ে উক্ত চার্জটিই কেবল ফ্রি হয়। পার্টস সংক্রান্ত সকল খরচ ঠিকই ক্রেতাকেই দিতে হয়। 

অর্থাৎ এই সময়ে আপনার ল্যাপটপের মাদারবোর্ড/র‍্যাম/হার্ডডিস্ক/ডিসপ্লে যদি নষ্ট হয়, সেটি আপনাকে টাকা দিয়েই কিনে দিতে হবে, দোকান শুধু সেটা ফ্রিতে লাগিয়ে দেবে। এই সময়ের মধ্যে ল্যাপটপ খুলে আপনি কোনো কাজ, যেমন ক্লিনআপ, 

এসএসডি লাগানো,র‍্যাম লাগানো, CMOS Battery চেঞ্জ, ইত্যাদি কাজ করতে গেলে সেই কাজগুলো দোকান ফ্রিতে করে দেবে, কিন্ত এসএসডি/র‍্যাম এমনকি সেই ৫০ টাকার CMOS ব্যাটারির দামটা ঠিকই আপনাকেই বহন করতে হবে।

রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টিই মুলত আসল ওয়ারেন্টিঃ

আপনাদের কি ইতিমধ্যেই বলেছি যে সার্ভিস ওয়ারেন্টি মুলত চোখের ধুলো ছাড়া আর কিছু না। সেক্ষেত্রে বোঝা যাচ্ছে এই ল্যাপটপগুলোর মুল ওয়ারেন্টি হচ্ছে সেই ৭ দিন বা ১৫ দিনের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি।। 

এই সময়ের মধ্যে ল্যাপটপের কোনো সমস্যা হলে,কোনো Faulty parts থাকলে ল্যাপটপ চেঞ্জ করে দেবে দোকান। কিন্ত আসলে তা হয় না। কারণ দেখা যায় এইসব ল্যাপটপের দোকানগুলোতে ৯,১০ টা ল্যাপটপ থাকে, তাও একটি মডেল একটার বেশি আসে না একবারে।

সেক্ষেত্রে আপনি ল্যাপটপের সমস্যা হলে ফেরত দিতে গেলে নতুন (অর্থাৎ একই মডেল এর অন্য ল্যাপটপ) পাবেন না। কারণ তাদের কাছে আপনার ইউনিটটি একটিই ছিল যেটি আপনি কিনে ফেলেছেন। 

এক্ষেত্রে দেখা যায় দোকানদার পার্টসটিই চেঞ্জ করে দেয়। এই ঘটনাও যে রাতারাতি খুবই দ্রুত সম্পন্ন হয় এমন ও নয়, বরং এসব পুরাতন ল্যাপটপের পার্টস খুজে বের করা, অর্ডার দিয়ে আনার জন্য ও সময় লাগে বেশ। মোটকথা নষ্ট হলে ওয়ারেন্টিতে দিলেও ক্রেতাকে বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়।সেই পার্টস যে সবসময় পাওয়াই যাবে সে কথাও নিশ্চিতভাবে কখনোই বলা যায় না।

ল্যাপটপ কেনার সময় যা যা চেক করবেনঃ

এখন আপনাদের মাঝে তুলে ধরব ল্যাপটপ কেনার সময় আপনারা দোকানে গিয়ে কোন কোন জিনিস অবশ্যই দেখে নেবেন  বা আপনাদের দেখে নেওয়া উচিত।

স্পেসিফিকেশন ও মডেলঃ

আপনার পছন্দ হওয়া মডেলটির নাম দোকানদার যা বলছে ও প্রকৃতপক্ষে ডিভাইসে কি registration করা আছে কিনা সেটি মিলিয়ে নিন অপরদিকে একই সাথে স্পেসিফিকেশন টাও চেক করে নেবেন। ল্যাপটপটি চালু করুন, এরপর উইন্ডোজ স্টার্ট থেকে Sysinfo টাইপ করুন। 

system information সিলেক্ট করুন। এখানে সবকিছুই পেয়ে যাবেন। আপনার সেই ল্যাপটপের মডেল কি, ব্রান্ড কোনটা। components সেকশনে ডিসপ্লে অংশে কোনো discrete গ্রাফিক্স আছে কি না চেক করতে পারবেন।

 সাধারণত দোকানে আপনাকে শুধু জেনারেশনই বলবে,এক্ষেত্রে প্রসেসর এর exact নামটাও চেক করে নিন কারণ একই জেনারেশনে একাধিক ভ্যারিয়েন্ট এর core i3,i5,i7 হোয়ে থাকে যেগুলোর স্পেসিফিকেশন,স্পিড,পারফর্মেন্স আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। এছাড়াও ডিসপ্লে রেজুলুশন টাও চেক করে নিন।

ব্যাটারিঃ

আপনি অবশ্যই ওই দোকানে বসে ল্যাপটপটি কিছুক্ষণ চালিয়ে দেখুন। ব্যাটারি কতটুকু, কি পরিমাণ ড্রেইন হচ্ছে, অতিরিক্ত ড্রেইন হচ্ছে কি না বুঝার চেষ্টা করুন। যদি দেখেন নিমিষেই ব্যাটারি লেভেল নেমে যাচ্ছে।

সেক্ষেত্রে ব্যাটারিটি ড্যামেজ অবস্থায় থাকার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কিছু খেয়াল করলে অবশ্যই সেই ল্যাপটপটি নেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

ল্যাপটপের এডাপ্টর ও চার্জিংঃ

দোকানি আপনাকে ল্যাপটপের সাথে যেই এডাপ্টার দিচ্ছে সেটি ল্যাপটপের সাথে কানেক্ট করুন, দেখুন চার্জ নিচ্ছে কি না। চার্জিং স্লো নাকি নরমাল,সেটিও চেক করুন। এক্ষেত্রে আমি বলবো ব্যাটারির হেলথ ঠিক রাখার জন্য যেহেতু সঠিক এডাপ্টর ব্যবহার করা জরুরি, 

সেজন্য আপনার ল্যাপটপের মডেলটি ইন্টারনেটে সার্চ করে সেটার সাথে কত ওয়াটের এডাপ্টর রয়েছে ও দোকানদার আপনাকে কত ওয়াটের এডাপ্টর দিচ্ছে সেটি মিলিয়ে নিন। এতে করে আপনার ল্যাপটপের লঙ্গিবিলিটি বেড়ে যাবে।

আরেকটি বিষয় না বললেই না, ল্যাপটপটিতে যদি দেখেন চার্জার ছাড়া চালু হচ্ছে না ও দোকানদার যদি বলে যে চার্জ নেই, চার্জ দিলেই চালু হবে,সেক্ষেত্রেও এই ল্যাপটপটি না নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কেননা চার্জার ছাড়া চালু না হওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে যে ল্যাপটপটির ব্যাটারি ড্যামেজ হয়ে গিয়েছে।

এটি কনফার্ম করতে চার্জার লাগিয়ে চালু করুন, ১০ মিনিট চালিয়ে রাখুন। চার্জ বাড়ছে কি না লক্ষ রাখুন। ও একটা সময় গিয়ে কেবলটি খুলে দিন, এতেও যদি ল্যাপটপ চালু থাকে সেক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যেতে পারে যে ব্যাটারিটি ঠিকই আছে।

কিন্ত যদি আপনি দেখেন যে এডাপ্টর খুলে ফেলার সাথে সাথে ল্যাপটপটি অফ হয়ে যাচ্ছে,সেক্ষেত্রে এটা নিশ্চিত হয়ে যাবেন যে এই ল্যাপটপটির ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই এই ল্যাপটপটি আপনাকে না নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

ল্যাপটপের ডিসপ্লে,বডিঃ

ল্যাপটপটির ডিসপ্লে চালু ও বন্ধ অবস্থায় ভালো মত inspect করুন। কোনো দাগ আছে কি না, কোনো scratch, damage আছে কি না। ডিসপ্লে তে দাগ, physical damage, scratch থাকলে সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে যে ডিসপ্লে চালু অবস্থায় incorrect color,color border,pixel missing,color-hole ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

সাধারণত এরকম সমস্যাগুলো দিনে দিনে বৃদ্ধি পায়, অর্থাৎ একটি দাগ থেকে অনেকগুলো দাগ, বা color hole এর সাইজ ও বাড়তে থাকে। এজন্য এটি ভালোমত দেখে নেওয়া উচিত। এমনটিযদি আপনার নজরে আসে তাহলে এই ল্যাপটপটি এড়িয়ে চলুন।

বডিতে স্ক্র্যাচ,দাগ রয়েছে কি না দেখুন। এই ধরনের ল্যাপটপে বডিতে দাগ থাকা, damage/scratch থাকা খুবই স্বাভাবিক কেননা এগুলো সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ। নিচের অংশে বা পেছনের দিকে কোনো screw মিসিং রয়েছে কি না, Hinge টি ভাঙ্গা/ঢিলা কি না সেটিও ভালো মত দেখে নিন।

কিপ্যাড,টাচপ্যাডঃ

সেকেন্ডহ্যান্ড ল্যাপটপের ক্ষেত্রে আপনাকে আরও একটি বিষয়ে নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরী এক্ষেত্রে দেখে নিন টাচপ্যাড ভালোমত কাজ করছে কি না, রেস্পন্সিভ কি না। টাচপ্যাড দিয়ে কার্সর মুভমেন্ট smooth,precise কি না। ক্লিক করেও দেখুন।

এর পরে আপনি কিবোর্ড চেঞ্জ করার জন্য একটি text document চালু করে অথবা keyboard tester সাইটে গিয়ে সবগুলো Keys চেক করে নিন। এই ধরনের ল্যাপটপে এক বা একাধিক Keys নষ্ট/কাজ না করার সম্ভাবনা থাকে। কী বোর্ডের কোন সমস্যা থাকলে আপনি ওখান থেকে বুঝতে পারবেন।

ল্যাপটপের হার্ড ড্রাইভ and DVD Writer: 

ল্যাপটপটিতে কতটুকু স্টোরেজ রয়েছে অর্থাৎ কত গিগাবাইট/টেরাবাইট হার্ড ড্রাইভ রয়েছে তা চেক করুন। অনলাইনে সার্চ করে অফিশিয়াল সাইটের সাথে মিলিয়ে নিন (অনেকক্ষেত্রে রিজিয়ন অনুসারে ব্রান্ডগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্টোরেজ সাপ্লাই করে বিভিন্ন জায়গায়,সেক্ষেত্রেও সাইটে সবগুলোই উল্লেখ থাকে)।

আর যে কাজটি অবশ্যই করবেন, সেটি হচ্ছে হেলথ চেকিং। Hard disk sentinel নামক app টি নামিয়ে নিন ঝটপট। চালু করে দেখে নিন সেই ল্যাপটপটির Hard Drive এর অবস্থা কি, Health কতটুকু ভালো আছে, Bad sectors আছে কি না। 

হেলথ যদি ৯০+ থাকে, খুবই ভালো। যদি বেশিই কম থাকে, সেক্ষেত্রে সেই ল্যাপটপ নেওয়াটা কিছুটা ঝুকি হয়ে যাবে (তবে এর মানে এই না যে খুব দ্রুতই নষ্ট হয়ে যাবে হেলথ কম থাকলে, তবে বেশি থাকলে অবশ্যই ভালো।

আর যেটি চেক করবেন ,সেটি হচ্ছে ডিভিডি রাইটার। রাইটারটি ঠিক আছে কি না,অর্থাত ডিস্ক রিড করতে পারছে কি না +eject করলে ঠিকমত eject হচ্ছে কি না।

ল্যাপটপের টেম্পারেচারঃ

প্রয়োজনে আপনার দোকানে বসে ল্যাপটপটি ৫,১০ মিনিট ব্রাউজার/ভিডিও প্লেয়ার/অফিস/ইউটিউব ভিডিও প্লেব্যাক ইত্যাদি সাধারণ  টাস্কগুলো টেস্ট করুন আর এ সময়ে speccy/hwmonitor এর মত সফটওয়্যার দিয়ে চেক করুন। 

যদি অল্পতেই CPU টেম্পারেচার ৮০,৯০ ছুই ছুই হয়ে যায় এসব সফটওয়্যার চালালে তাহলে সেই ল্যাপটপটি দিয়ে ভারি কাজ করা এক প্রকার অসম্ভব ও ঝুকিপুর্ণ হয়ে যাবে। তাই আপনি যদি এমন কোন কিছু খেয়াল করে থাকেন তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় অন্য আরেকটি ল্যাপটপ দেখতে পারেন।

সেকেন্ড হ্যান্ড এই ল্যাপটপগুলোর কন্ডিশন কেমন থাকেঃ

প্রসেসরঃ

সাধারণত ইম্পোর্টেড ল্যাপটপগুলোর প্রসেসর জেনারেশন 4th,5th,6th gen এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। বরং এর বাইরে 7th জেন বা আরো নতুন গুলো আসে না বললেই চলে। ও প্রসেসর ফ্যামিলি Core i3,i5 ই বেশি দেখা যায়,কিছু ক্ষেত্রে i7 ও পাওয়া যায়। 

AMD এর Ryzen Series টিও পাওয়া যায় না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে AMD এর Ryzen Series বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে। কোর আই ফাইভ বা আই সেভেন দেখে খুশি হওয়ার মতো কোনো কারণ নেই। কেননা 4th,5th Gen এর Core i5,i3 ল্যাপটপগুলোর কোর সংখ্যা মাত্র ২ (কিছু মডেল রয়েছে চার কোরের)। থ্রেড সংখ্যা ২/৪।

অর্থাৎ এখনকার ল্যাপটপ/ডেস্কটপ লাইনআপ এর i3 প্রসেসর এর স্পেকস ও পারফর্মেন্স ও এইসব প্রসেসর থেকে অনেক অনেক বেশি ভালো হয়ে থাকে। বরং 10th বা 11th gen নয়, 8/9th gen এর i3 প্রসেসর গুলোও এইসব 4th gen/5th gen এর i5/i7 থেকে বেটার স্পেসিফিকেশন ও পারফর্মেন্স অফার করে থাকে।

এই সব 4th/5th gen ল্যাপটপ প্রসেসর গুলো ২০১৩/১৪ সালের দিকেই লঞ্চ হয়েছিল ,অর্থাৎ আজ থেকে ৭/৮ বছর আগে। তার উপর ল্যাপটপগুলো ২২/২৪ ন্যানোমিটার এর পুরাতন আর্কিটেকচারে তৈরী, ক্যাশ মেমোরি ও অনেক লো থাকে।

প্রসেসর এর কথা যেহেতু এসেই গেলো,ক্লক স্পিড সম্পর্কেও বলা উচিত। এই প্রসেসরগুলোর ক্লক স্পিড ও একেবারেই কম থাকে। সাধারণত আমাদের দেশে আনা মডেলগুলোতে U/M সিরিজ এর প্রসেসর থাকে যেগুলোর বুস্ট ক্লক 2.2/2.5 বা সর্বোচ্চ 2.7Ghz এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। 

অর্থাৎ আমরা যদি 10th/11th জেন এর i5,i7 বাদ দিয়ে i3 এর সাথেও তুলনা করি, হালের i3 প্রসেসরগুলোও 3.4Ghz boost clock অফার করছে। i5,i7 এর ক্ষেত্রে তা আরো অনেক বেশি হয়ে থাকে।

ব্রান্ডঃ

আপনারা যদি একটু খেয়াল করে দেখেন তাহলে ইম্পোর্টেড ইউজড ল্যাপটপগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি যে ব্রান্ডের ল্যাপটপ পাওয়া যায় সেটি হচ্ছে HP। বলা যায় অর্ধেকের বেশি ল্যাপটপই থাকে এই ব্রান্ডের। এছাড়াও Dell,Lenovo এর অল্প কিছু ল্যাপটপ আসে। আসুস এর ল্যাপটপ পাওয়া যায় না বললেই চলে।

র‍্যাম, র‍্যাম স্লট ও upgrade: 

এ সমস্ত সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ 4th,5th Gen এর সময় DDR4 রিলিজ হয়েছিল না। সেই সময়ে DDR3 র‍্যামই কেবল বাজারে ছিল ও ল্যাপটপ গুলোও সেজন্য সেই DDR3 র‍্যাম দিয়েই শিপড হতো। র‍্যাম স্পিড ও ১২৩৩,১৬০০,২১৩৩ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল DDR3 এর। 

স্বাভাবিকভাবেই  এইসব ল্যাপটপের র‍্যামগুলোর স্পিড ১৬০০Mhz বা এর আশেপাশেই হয়ে থাকে। আর ল্যাপটপগুলোর ক্যাপাসিটির কথা যদি বলি, আমাদের দেশে ইম্পোর্টেড” হয়ে আসা যে ল্যাপটপগুলো,অর্থাৎ আমাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু যে ল্যাপটপগুলো, সেগুলোতে বেশিরভাগ চার গিগাবাইট এর র‍্যামই দেওয়া থাকে। 

মডেলভেদে থাকে দ্বিতীয় র‍্যাম স্লট। এক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে অবশ্যই স্পেকস চেক করে শিওর হয়ে নেওয়ার, যাতে আপগ্রেড করা যায়, কেননা চার গিগাবাইট র‍্যাম দিয়ে কাজ করা  কার্যত অসম্ভব ২০২১ সালে এসে।

অপরদিকে র‍্যাম স্পিডের কথা বলতে গেলে আজকালকার ল্যাপটপগুলোতে যে র‍্যাম থাকে, সেগুলো থেকে অনেকটাই দুর্বল এসব DDR3 Low Speed এর র‍্যামগুলো। তার পরেও সাধারণ ইউসেজে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না আশা করা যায়। তবে চার জিবি র‍্যাম থাকলে মাল্টিটাস্কিং করা অসম্ভব হয়ে যাবে কেননা ফ্রেশ উইন্ডোজ ও ২৫০০-২৭০০/৩০০০ মেগাবাইট পর্যন্ত র‍্যাম ব্যবহার করে।

স্টোরেজ ও স্টোরেজ কন্ডিশন,আপগ্রেডিবিলিটিঃ

স্টোরেজ হিসেবে হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ থাকে। (খুবই অল্প সংখ্যক মডেল,Slim/thin মডেলগুলোতে এসএসডি থাকে কিন্ত আপগ্রেড এর অপশন থাকে না)।  হার্ডডিস্কের ক্যাপাসিটি ৫০০ জিবি থেকে ১ টেরাবাইট এর মধ্যেই হয়ে থাকে। 

২০১৩,১৪ সালের ল্যাপটপ যেহেতু  এগুলো, সে সময়ে M.2 এর প্রচলন ছিল না বললেই চলে।তাই এসব ল্যাপটপেও M.2 slot আশা করাটা বোকামী। তবে ডিভিডি রাইটার থাকে,সেটিও SATA Interface এর হওয়ায় Caddy ব্যবহার করে সহজেই SATA SSD লাগিয়ে নেওয়া যায়।

Storage Condition নিয়ে আলোচনা করাটা গুরুত্বপুর্ণ বলেই আমি মনে করছি। যেহেতু এগুলো অনেকদিন আগের, ব্যবহার হোক বা না হোক, এই ল্যাপটপগুলোর বয়স ৭,৮ বছর হয়ে থাকে । সেজন্য এর মেকানিকাল Spinning Hard Drive এর এত দিনে ভালো অবস্থায় থাকার কথা না। 

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ইউজড হওয়ার কারনে বা পুরাতন হওয়ার কারণে এগুলো Malfunction করে। হেলথ চেক করলে এসব ক্ষেত্রে ৫০,৬০/৭০% এরকম হেলথ ও পাওয়া যায়, ভাগ্য অতিরিক্ত খারাপ হলে এর থেকেও কম হেলথ এর HDD আপনার ভাগ্যে পরতে পারে। আবার ভাগ্য ভালো হলে ৯০%+ হেলথ এর HDD ও পেয়ে যেতে পারেন।

স্টোরেজ স্পিডঃ

আজকাল HDD এর ব্যবহার অনেকটাই কমে এসেছে। অন্তত প্রতিটি সিস্টেমেই একটি হলেও SSD রাখার চিন্তাভাবনা বেশিরভাগ পিসি ইউজারই করে থাকেন। তারপরেও বাজারে যেসব HDD এভেলেবল রয়েছে, সেগুলোর স্পিড 7200RPM। 

অপরদিকে এই  পুরাতন ল্যাপটপগুলোর মধ্যে যেসব HDD থাকে, সেগুলোতে 5200RPM এর HDD ই বেশি পাওয়া যায় যেগুলোর স্পিড এসব HDD থেকে আরো অনেকটাই স্লো। এর রিড,রাইট স্পিড/এবিলিটি হয়ে থাকে অনেকটাই কম। 

100% Disk usage সমস্যাটা অনেক বেশি হবে এইসব ল্যাপটপে। ফাইল কপি/কাট করতে সময় লাগবে অনেক। Read Speed কম হওয়ার কারনে App opening এও সময় লাগবে অনেকটাই।

ব্যাটারি কন্ডিশনঃ

এখানেও আগের কিছু কথারই পুনরাবৃত্তি করতে হচ্ছে। এই ল্যাপটপগুলো অনেকদিন আগের একই সাথে Used।যেকোনো ডিভাইসেরই ব্যাটারি ব্যবহার এর সাথে সাথে ব্যাকআপ কমে যায়। 

চার্জ নিতে দেরি হওয়া,চার্জ না থাকা, চার্জ খুবই দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারগুলো ঘটা শুরু হয় ও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে।আর ইউজড ল্যাপটপ এর বয়স যদি হয় ৬,৭/৮ বছর,সেক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।

idle drain:

অনেকক্ষেত্রেই ব্যাটারি সম্পুর্ণ ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে।ঠিক থাকলেও ব্যাকআপ অনেক কম দেওয়া স্বাভাবিক ঘটনা কারণ অপারেটিং সিস্টেম,সফটওয়্যার environment অনেক advanced এখনকার দিনে, সফটওয়্যারগুলো অনেক Power hungry হয়ে থাকে। 

সব মিলিয়ে ব্যাটারি ব্যাকআপ এর ক্ষেত্রে এই ল্যাপটপগুলো সুবিধাজনক হয় না।। সাথে আরেকটি সমস্যা যোগ হয়। তা হচ্ছে Idle Drain, অর্থাত,শাট ডাউন অবস্থায় ল্যাপটপের ব্যাটারির অনেকটা চার্জ ই নষ্ট হয়ে যায়। 

দেখা যায় ফুল চার্জ দেওয়ার পর পরদিন চালু করলে চার্জ ৮৫/৯০ এ নেমে আসে। বা এক সপ্তাহ/১৫দিনে সম্পুর্ণ চার্জই চলে যায়। দুর্বল/ড্যামেজ ব্যাটারির বড় একটি লক্ষণ হচ্ছে Idle Drain বা আপনাআপনি চার্জ চলে যাওয়া।

ডিসপ্লে ও বডিঃ

ডিসপ্লেতে স্ক্র্যাচ থাকতেও পারে নাও পারে। বডিতেও দাগ, কালার উঠে যাওয়া, উজ্জলতা না থাকার ব্যাপারগুলো লক্ষ করা যাবে এসব ল্যাপটপে।কিপ্যাডগুলোর অবস্থা ও সুবিধাজনক পর্যায়ে নাও থাকতে পারে।

ডিসপ্লেতে সরাসরি কোনো দাগ, লাইন,ডট/Hole যদি নাও থাকে, কিছুদিন পর যে থাকবে না সেরকম নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না কারণ সেই একটাই, এগুলো অনেক পুরাতন+অনেক হাত ঘুরে আপনার কাছে এসেছে। আগে এগুলো কোথায় কিভাবে ব্যবহ্বত হয়েছে, কোনো আঘাত/ধাক্কা/পরে যাওয়া ইত্যাদি ঘটনা ঘটেছে কি না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।

সাধারণত 4th gen,5th gen এর মডেলগুলোতে 720p বা HD Display দেওয়া থাকে। ফুল এইচডি ডিসপ্লে সচরাচর পাওয়া যায় না। 6th gen,7th gen এর কিছু মডেলে অবশ্য রয়েছে 1080p Display। 

ডিসপ্লে এর কোয়ালিটি,কালার একুরেসি এসব বিষয়েও যে ২০২১/২০ সালের ডিসপ্লে গুলোর মত এক্সপেরিয়েন্স পাবেন তা বলা যায় না। এসব ডিসপ্লে এর কালার একুরেসি,ওভারল কোয়ালিটি ও অনেকটাই খারাপের দিকেই বলা যায়।

টেম্পারেচারঃ

সেই সময়ের ল্যাপটপের কুলিং মেথড,কুলিং সিস্টেম অবশ্যই আজকালকার মত উন্নত ছিল না। সেই সময়ে যেসব সফটওয়্যার ব্যবহৃত হত(২০১৩,১৪ সালের Adobe সহ অন্যন্য সফটওয়ার), সেগুলোর জন্যই suitable ছিল সেই সময়ের প্রসেসর গুলো। 

সেজন্য আজকালকার environment এ উইন্ডোজ ১০ এ সব লেটেস্ট সফটওয়্যার চালালে সেটি প্রসেসর এর জন্য চাপের ব্যাপারই হয়ে যাবে। সেজন্য টেম্পারেচার ও স্বাভাবিক এর তুলনায় বেশি থাকতে পারে। 

সাধারণ ইউজে ,1080p video playback,office,browsing ইত্যাদি কাজেই টেম্পারেচার ৬০-৭০ এর কোটা পার করে ফেলতে পারে ।আর গেমিং বা এডিটিং এর ক্ষেত্রে লেটেস্ট গেম বা Adobe এর Latest এর সফটওয়্যার চালালে টেম্প ৯০-১০০+ হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক ও সিস্টেম ক্রাশ/রিস্টার্ট নিতে পারে।

টেম্পারেচার বেশি থাকার আরেকটি কারণ হচ্ছে এতদিন ল্যাপটপগুলো idle অবস্থাতেও ছিল,ব্যবহ্বত ও হয়েছে, এই দুইয়ে মিলে এগুলোর প্রসেসর এর থার্মাল পেস্ট শুকিয়ে যাওয়ার কথা। থার্মাল পেস্ট শুকিয়ে যাওয়ার কারণেই অনেকসময় টেম্পারেচার অনেক বেশি হয়ে থাকে।

পারফর্মেন্স ও এক্সপেরিয়েন্সঃ 

হয়তো এই আর্টিকেলের অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ অংশে আমরা চলে এসেছি। যদি কেও ভেবে থাকেন উপরের সবগুলো কথা আমার মনগড়া ,সেক্ষেত্রে ছোট্ট করে ভুলটা ভাঙিয়ে দি। 

আমার বেশ কিছু পুরাতন ল্যাপটপ (including imported ‘used’ laptop) চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে যেমন i3 3rd gen,i5 4th gen,i7 1st gen etc। এবং আমি এইসব ল্যাপটপ থেকে কিরকম পারফর্মেন্স পাওয়া যাবে তার আইডিয়া আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই দেওয়ার চেষ্টা করবো।

১। প্রসেসরঃ

প্রসেসিং পাওয়ার এইসব প্রসেসরগুলোর অনেক বেশিই স্লো। এর জন্য অল্পতেই 100% CPU Usage এর মত ঘটনা ঘটে।। বিশেষ করে ব্রাউজিং এর সময় ২/৩টা এক্সটেনশন চালু থাকলেও CPU Usage অনেক হাই থাকে।

আর প্রসেসিং পাওয়ার কম হওয়ার কারণেই App চালু হওয়ার পর পর ফুল স্ক্রিন/ফিচারস রেন্ডার হতে সামান্য সময় বেশি লাগে। যেমন ব্রাউজার চালু হওয়ার পর বাটনস,ওয়ালপেপার ইত্যাদি লোড হতে,রেন্ডার হতে সময় নেয়।

আর এই প্রসেসিং পাওয়ার এর কমতির কারণেই ওভারল এক্সপেরিয়েন্সে একটা Laggy laggy ভাব লক্ষ করা যাবে প্রায়ই। উদাহরণস্বরুপ ওয়াল্টন,সিম্ফোনি,টেকনো,ইনফিনিক্স বা রিয়েলমির ৮,৯ হাজার টাকার ২/৩ জিবি র‍্যাম ও Mediatek প্রসেসর এর মোবাইলগুলোতে যে অভারল একটা slowness,laggy ভাবটা লক্ষ করা যায় ,ঠিক সেই laggy ভাবটাই পাওয়া যাবে এসব ল্যাপটপে।

এবং প্রায়ই রাইট ক্লিক করে রিফ্রেশ বাটন আনতেও সময় লেগে যায়।

২। স্টোরেজঃ

  • আগেই বলেছি স্টোরেজ হিসেবে যে হার্ডডিস্ক গুলো থাকবে সেগুলো অনেক স্লো । এজন্য সিস্টেমে সবথেকে বেশি যে সমস্যাটা হয়ে থাকে তা হলো 100% Hard disk usage। দেখা যায় পিসি চালু করার প্রথম ৫ মিনিট বিভিন্ন startup apps,bloatwares চালু হওয়ার সময়টা সিস্টেম অনেকটাই স্লো হয়ে যায়, CPU Usage ও 100% এ গিয়ে ঠেকে। ফাইলস কপি/পেস্ট করতেও লাগে স্বাভাবিক এর থেকে অনেক অনেক বেশি সময়।
  • আর স্লো স্টোরেজ এর কারণে আরেকটি সমস্যা হয়ে থাকে,সেটি হচ্ছে App opening এর ক্ষেত্রে প্রথমবার অতিরিক্ত সময় নেয়।

    লোডিং চলতে থাকে বেশ অনেক সেকেন্ড ধরে। তারপর App টি চালু হয়। অবশ্য দ্বিতীয়বার চালু করলে এই সময় বেশ অনেকখানি কমে আসে। আর এই App স্টার্টআপ এর মুহুর্তে Disk Usage 100% হয়ে যায়। ব্রাউজার চালু করা, ভিডিও প্লেয়ারে কোনো ফাইল চালু করা, অফিস ফাইল চালু ইত্যাদি টাস্ক প্রথমবার বেশ অনেক সময় লাগে।

এছাড়াও-

  • -মাঝেমধ্যেই,বিশেষ করে যখন ব্যাকগ্রাউন্ডে App loading,processing চলছে, সেই সময়ে রাইট ক্লিক করে রিফ্রেশ বাটন নিয়ে আসতেও অনেক সময় লাগে। লোডিং চিহ্ন উঠে থাকে। এই সমস্যা অহরহ ঘটে থাকে এইসব ল্যাপটপে। Explorer Hang/not responding ইস্যু ও হয়ে থাকে।
  • -আপডেট ও ইন্সটলেশনঃ উইন্ডোজ আপডেট ডাউনলোড এর পর ইন্সটল (পিসি রানিং অবস্থায় ইন্সটল ও পিসি শাটডাউন-স্টার্ট এর Intermediate time এ যে ইন্সটলেশন প্রসেস চলে উইন্ডোজ আপডেটের, উভয়ক্ষেত্রেই অনেক বেশি সময় লেগে যায় হার্ড ড্রাইভ এর কারণে। এছাড়াও বিভিন্ন সফটওয়্যার ইন্সটলের ক্ষেত্রেও Delay লক্ষ করা যাবে।
  • -এই সবকিছুকে ছাপিয়ে স্লো স্টোরেজের কারণে যে সমস্যাটার সম্মুখীন হতে হবে তা হচ্ছে Boot time ও Shut down Time। পাওয়ার বাটনে চাপ দেওয়া থেকে শুরু করে Desktop এ আসা পর্যন্ত, এই সম্পুর্ণ প্রসেসে অনেকটা সময় লেগে যায় এসব পুরাতন ল্যাপটপে । যার ফলে অনেকেরই ধৈর্যের বাধ ভেঙে যেতে পারে। সাথে শাট ডাউনেও সময় লাগার ব্যাপারটিও রয়েছে।

র‍্যামঃ

চার গিগাবাইট র‍্যাম এর কারণে মাল্টিটাস্কিং করা অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। যেহেতু আজকাল একটি ক্লিন সিস্টেম ও ৩ গিগাবাইট পর্যন্ত র‍্যাম কনজিউম করতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্রাউজারে ২/৩টি ট্যাব যদি ২/৩টি এক্সটেনশন দিয়ে চালু করা যায় তাতেই ল্যাগ/স্লো হতে পারে। আর ব্রাউজারের সাথে সাথে যদি কেও Adobe/MS Office/Video Player ইত্যাদি চালাতে চান সেক্ষেত্রে কাজ করা অসম্ভব হয়ে যেতে পারে।

ক্রেতার যেসব বিষয়ে স্যাক্রিফাইস করা লাগবে একটি নতুন ল্যাপটপের সাপেক্ষেঃ

ওল্ড জেন প্রসেসরঃঅবশ্যই প্রসেসর গুলো পুরাতন জেনারেশন এর হওয়ায় কোর সংখ্যা,ক্লক স্পিড কম থাকবে অনেক। ক্যাশ মেমোরিও থাকবে কম।

ডিজাইনঃ এখনকার ল্যাপটপ গুলোর মত স্টাইলিশ,লাইট,থিন হবে না এইসব ল্যাপটপ। ওজনে ভারী হবে।

স্টোরেজঃ হার্ড ড্রাইভ থাকবে ও তা হবে যথেষ্ট স্লো ও পুরাতন। এবং এসব হার্ড ড্রাইভের হেলথ ও ১০০% থাকবে না।

র‍্যাম ও র‍্যাম স্পিডঃ র‍্যাম এর পরিমাণ থাকবে কম,র‍্যামের স্পিড ও থাকবে কম। আজকালকার ল্যাপটপ গুলোর 2400,2666 বা 3200mhz এর বিপরীতে ১৬০০ বা এর আশেপাশে স্পিড থাকবে এসব র‍্যামের। র‍্যামের পরিমাণ বেশিরভাগ মডেলেই থাকবে চার জিবি।

ব্যাটারিঃ নতুন ল্যাপটপের ব্যাটারিগুলো যেমন ফ্রেশ থাকে,অনেক্ষণ ব্যাকআপ দেয় ও অনেকদিন সার্ভিস দিতে পারে। এই ক্ষেত্রে এসব ইউজড ল্যাপটপের ব্যাটারি অনেক কম ব্যাকআপ দেবে ও অনেক সময় ড্যামেজ ও হতে পারে।

ডিসপ্লেঃ ডিসপ্লে রেজুলুশনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হবে ৭২০পি, যারা গ্রাফিক্স এর কাজ করবেন,কালার একুরেসি, বেটার কোয়ালিটি ডিসপ্লে চান তারা হতাশ হবেন। আজকালকার ল্যাপটপগুলোর ডিসপ্লে বেশিরভাগ 1080p হয় ও ওভারল কোয়ালিটি ও থাকে ভালো।

-M.2 NVMe/M.2 SATA স্লট পাবেন না।এসএসডি লাগাতে হলে Caddy ব্যবহার করতে হবে।

কেনার সাথে সাথে বেস্ট এক্সপেরিয়েন্স এর জন্য যা করবেনঃ

উপরে বেশ কিছু সমস্যার কথা বর্ণনা করেছি। সেগুলোর মধ্যে বেশ কিছু সম্পুর্ণ সমাধান যোগ্য, কিছু আছে আংশিক সমাধান যোগ্য। সেক্ষেত্রে যেসব বিষয়গুলো সমাধানযোগ্য, সেগুলোর সমাধান আমি দিয়ে দেব ও পরামর্শ থাকবে কেনার সময়েই এই সমস্যাগুলোর সমাধান করে নিতে।

স্টোরেজঃ

m.2 স্লট থাক বা না থাক। এসব ল্যাপটপে DVD Writer থাকবেই। আর উপরে যেসব স্টোরেজ সংক্রান্ত সমস্যার কথা উল্লেখ করেছি সেগুলো সবই একটি পদক্ষেপেই সমাধান করা সম্ভব, তা হলো একটি এসএসডি লাগিয়ে নেওয়া। 

এসএসডি লাগিয়ে নিলে 100% disk Usage সমস্যা, App opening এ অতিরিক্ত সময় লাগার সমস্যা,explorer hang/ in-responsive হয়ে যাওয়ার সমস্যা, উইন্ডোজ আপডেট/ইন্সটল/সফটওয়্যার আপডেট/ইন্সটল এ অতিরিক্ত সময় লাগার সমস্যা ও সর্বশেষ, পিসি চালু হতে অনেক চালু হওয়ার সমস্যা, এই সবগুলো সমস্যাই সমাধান হয়ে যাবে যদি আপনি একটি এসএসডি লাগিয়ে নেন।

খরচঃ

এসএসডি লাগাতে বেশি খরচ হবে না,পদ্ধতিটাও সহজ।এসএসডিটি Caddy নামক টুলের সাহায্যে Laptop এর DVD Writer এর স্থলে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই SATA SSD ব্যবহার করতে হবে কারণ SATA SSD DVD Writer এর মতই SATA connectivity এর মাধ্যমে কানেক্ট হয়। 

Caddy এর দাম ২০০-৫০০/৭০০ পর্যন্ত হতে পারে। শুধু উইন্ডোজ আর কিছু সফটওয়্যার রাখার জন্য এসএসডি লাগালে ১২০ জিবি ক্যাপাসিটির SATA SSD ই যথেষ্ট ও সেক্ষেত্রে আপনার এসএসডি ও Caddy সহ খরচ ২৫০০/২৬০০ এর মধ্যেই সম্পন্ন হয়ে যাবে।

এসএসডি লাগালে হার্ডডিস্ক সংক্রান্ত সবগুলো সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন, সাথে CPU এর কারণে যে Laggy,Laggy /slowness এর ব্যাপারটা উল্লেখ করেছি, সেটি সম্পুর্ণ /১০০% না হলেও অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

র‍্যামঃ

ল্যাপটপে চার গিগাবাইট র‍্যাম থাকলে আমার অনুরোধ থাকবে বেস্ট এক্সপেরিয়েন্স এর জন্য কেনার সময়েই একটি চার/আট গিগাবাইট এর র‍্যাম লাগিয়ে নেবেন (দ্বিতীয় স্লটে)। অবশ্যই বাস স্পিড মিলিয়ে নিবেন র‍্যামের। 

সিস্টেমে ৮ গিগাবাইট র‍্যাম থাকলে মাল্টিটাস্কিং করা অনেক সহজ ও শান্তিপুর্ণ হবে। ল্যাপটপটি চালিয়েও অধিক শান্তি পাওয়া যাবে। র‍্যাম এর স্বল্পতা জনিত যেসব সমস্যা,সেগুলোর সমাধান হয়ে যাবে। র‍্যাম এর দাম ১৬০০-২০০০ এর মধ্যে।

Cmos Battery:

ল্যাপটপের ব্যাটারি/পাওয়ার সংক্রান্ত বেশ কিছু সমস্যা মাদারবোর্ড এর  CMOS Battery এর কারণে হয়ে থাকে।দীর্ঘদিন অলস পরে থাকার কারণে CMOS ব্যাটারি নষ্ট হয়ে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ল্যাপটপটি কেনার সময়েই CMOS Battery টি চেঞ্জ করে নিন।

কারা কিনবেন, কারাই বা কিনবেন নাঃ

কাদের জন্যঃ

যাদের বাজেট অনেক কম।ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করবেন অথবা স্টুডেন্ট যারা যাদের প্রেজেন্টেশন দেওয়া/পিডিএফ পড়া/গান শোনা,মুভি দেখা/ইউটিউব,ফেসবুক চালানো আর ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর মধ্যেই কাজ সীমাবদ্ধ কিন্ত বাজেট কম। 

যারা নিজে কাজ করা শুরু করতে চান, লো বাজেটে কিছু একটা নিয়ে নিতে চাচ্ছেন, ৪২/৪৫ হাজার টাকা দিয়ে 10th gen i3 বা 50+ দিয়ে 11th gen i3 এর ল্যাপটপ ও যারা নিতে পারবেন না বা এত খরচ করতে ইচ্ছুক নন। তাদের জন্যই এই ল্যাপটপ গুলো।

উপরে উল্লেখিত প্রায় সব কাজই কোনো সমস্যা ছাড়াই করা যাবে Core i5, 5th,4th gen এর ল্যাপটপ গুলো দিয়ে। ভারী ভারী রেন্ডারিং,এডিটিং সফটওয়্যার এর কাজ না থাকলে  এমনিতে প্রোগ্রামিং,Web designing এ যেসব টুলস ব্যবহার হয় সেগুলো খুব ভালোমতই হ্যান্ডেল করতে পারবে এসব ল্যাপটপ।

for better experience:

উপরে উল্লেখ করেছি প্রসেসর ও হার্ডডিস্ক এর দুর্বলতার কারণে স্লো হওয়ার ব্যাপারটা ও র‍্যাম কম হওয়ার সমস্যাটা। তবে আমার সাজেশন থাকবে হাতে ৪০০০-৪৫০০টাকা আলাদা রেখে ল্যাপটপ কেনার সময় র‍্যাম আর এসএসডি যদি লাগিয়ে নিতে পারেন, তাহলে প্রায় নতুন ল্যাপটপের মতই সার্ভিস পাবেন এসব ল্যাপটপ থেকে ও কাজ করতেও অনেক সুবিধা হবে এবং ওভারল এক্সপেরিয়েন্স অনেক ভালো হবে।

এছাড়াও যারা এডোবি সহ অন্যন্য এডিটিং,রেন্ডারিং সফটওয়্যার এর ২০১২,১৩/১৪ সালের ভার্সনগুলো চালাতে পারবেন বা চালাবেন,যাদের কাজ ওইগুলো দিয়ে হতে পারে। তারা নিতে পারেন।

কাদের জন্য নাঃ

যারা 3d editing,ভিডিও এডিটিং,রেন্ডারিং এর কাজ করবেন, লেটেস্ট গেম নিয়মিত বা মাঝেমধ্যে খেলার ইচ্ছা আছে যাদের,তাদের বলবো এই ল্যাপটপ গুলো এভয়েড করতে। প্রথমত CPU বেজড কাজগুলো এখানে একেবারেই ভালো হবে না কারণ কোর থ্রেড এর সংখ্যা একেবারেই কম, ক্যাশ মেমোরি অনেক কম আর Base clock,boost clock স্পিড ও অনেক কম। এই কারণেই আজকালকার লেটেস্ট Heavy সফটওয়্যার গুলো দিয়ে কাজ করা কার্যত অসম্ভব।

কোনো রকমে কাজ শুরু করতে গেলেও হিটিং সমস্যার কারণে ল্যাপটপ বন্ধ হওয়া/হ্যাং হওয়া/রিস্টার্ট নেওয়ার মত ঘটনা ঘটবেই।

গেমারসঃ

অন্যদিকে যারা গেমিং করবেন, গেমিং এর ক্ষেত্রেও দুর্বল প্রসেসর ,লো র‍্যাম স্পিড বাধা হয়ে থাকবে। তার থেকেও বড় কথা এসব ল্যাপটপের অনেকগুলোতেই Discrete গ্রাফিক্স পাওয়া যাবে না, দুই একটি মডেল এ পাওয়া গেলেও ২০২১ সালে এসে সেগুলো দিয়ে লেটেস্ট গেমগুলোতে ৫/১০ এফপিএস এর বেশি পাওয়া সম্ভব হবে না। 

এমনকি Fortnite,apex,valorent,CSGO এর মত Esports title গুলোও 720p lowest সেটিংসে চালানো লাগতে পারে, এবং তাতেও কতটুকু ভালো এফপিএস পাওয়া যাবে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তার থেকেও বড় সমস্যা হবে হিটিং ইস্যু। টেম্পারেচার হাই হয়ে গেম হ্যাং হওয়া/বন্ধ হয়ে যাওয়া/পিসি বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটবে।

দামঃ

সাধারণত 22/23 হাজারে i5 4th gen, ২৫/২৬/২৭ হাজারে i5 5th gen , 29/30 হাজারে 6th gen ও ৩৪/৩৫ হাজারে 7th gen i5 ল্যাপটপ পাওয়া যায়। শপ অনুযায়ী দাম কম বেশি হতে পারে। এগুলোর মধ্যে 6th,7th gen এর কিছু মডেলে র‍্যাম আপগ্রেড,এসএসডি আপগ্রেড এর অপশন পাবেন না, কিন্ত সেক্ষেত্রে ২৫৬ /৫০০ জিবি এসএসডি লাগানোই থাকে। 

আবার এই 6th,7th জেন মডেলগুলোতে র‍্যাম ও থাকে ৮ জিবি,ডিসপ্লে ও 1080p থাকে কিছু মডেলে। যেসব স্লিম/থিন মডেলগুলো এসএসডি ও আট জিবি র‍্যাম এর সাথে আসে সেগুলোতে অনেক ক্ষেত্রেই আলাদা র‍্যাম স্লট বা এসএসডির আলাদা স্লট/ডিভিডি রাইটার থাকে না এই ব্যাপারগুলো অবশ্যই মাথায় রাখবেন।

এই ধরনের তথ্যবহুল পোস্ট গুলো পেতে আমাদের পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের অফিশিয়াল পেজ গুলো ফলো করলে নতুন কোন পোস্ট করার সাথে সাথে আপনার কাছে নোটিফিকেশন চলে যাবে এছাড়াও আপনার যদি ব্যক্তিগত কোনো মতামত থাকে তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই আপনি জানাতে পারবেন মেসেঞ্জারে টেক্সট করে অথবা কন্টাক্ট ফর্ম পূরণের মাধ্যমে।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার পদ্ধতিসমূহ জানুন এখানে আরও পড়ুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ