বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া আরবিতেঃ
শয়তান আমাদের অনিষ্ঠ করার জন্যে বা পথ ভ্রষ্ট করার জন্যে সব সময় আমাদের পিছনে লেগে আছে। কিভাবে আমাদের আল্লাহ তা'আলার পথ থেকে দূরে রাখবে সেটাই তার একমাত্র কাজ। আর শয়তানের এই অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের সকলেরই সচেতন থাকা অত্যান্ত জরুরি এবং আল্লাহর কালাম সব সময়ের জন্যে পড়া উচিৎ।
আর সেই কারনেই আমরা আজকে এই পোস্টের মাধ্যেমে জানবো বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া। এবং বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলায় উচ্চারণ ও বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া আরবি এছাড়াও বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলা এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিবো ধারাবাহিকভাবে এই পোস্টে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রস্রাব-পায়খানার আগে ও পরে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনার কথা বলেছেন। তিনি নিজেও প্রস্রাব-পায়খানা করার আগে ও পরে আল্লাহর কাছে দোয়া দোয়া করতেন। কিন্তু কেন তিনি নিজে আল্লাহর সাহায্য চাইতেন এবং অন্যদের সাহায্য চাইতে বলেছেন? এবং বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া করার জন্যে আমাদের বলেছেন।
মানুষের সুস্থ থাকার জন্য স্বাভাবিকভাবে নিয়মিত প্রস্রাব-পায়খানা হওয়া অত্যন্ত জরুরি। প্রস্রাব-পায়খানা করার এ প্রক্রিয়া মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সৃষ্টজীবের জন্য এক অনন্য নেয়ামত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সময়ের দোয়া পড়ার কারণ ও করণীয় বর্ণনা করেছেন। কীভাবে টয়লেট ব্যবহার করতে হবে, বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া ইত্যাদি নিয়ে ইসলামের শিষ্টাচার তুলে ধরেছেন।
বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া পড়ার কারণঃ
বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়াঃ
- বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা আর পায়খানা হতে বের হওয়ার সময় ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (ইবনে মাজাহ, তিরমিযী)
- অতি প্রয়োজনীয় ব্যতীত কথাবার্তা না বলা। তেমনি ভাবে আল্লাহর নাম মখে উচ্চারণ না করা।
দোয়া- بِسْمِ اللهِ اَللهُمَّ إِنّيْ أَعًوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَ الْخَبَائِثِ
দোয়া- ﻏُﻔْﺮَﺍﻧَﻚَ اَللَّهُمَّ
দোয়া- غُفْرَانَكَ الْحَمْدُ لِلهِ الَّذِيْ اَذْهَبَ عَنِّيْ الْاَذَى وَعَافَانِيْ
প্রস্রাব-পায়খানা করার সময় করণীয়
- বাথরুমে প্রবেশ করার আগের দোয়া এবং পরের দোয়া পড়া এবং বদ জিনের আক্রমণ থেকে আশ্রয় চাওয়া।
- বাথরুমে প্রবেশ করার আগে দোয়া পড়ে বাম পা দিয়ে প্রস্রাব পায়খানা করতে যাওয়া।’ (আবু দাউদ)
- বাথরুমে প্রবেশ করার সময় মাথা ঢেকে রাখা। (বায়হাকি) খালি মাথায় না থাকা। টুপি, রুমাল, ওড়না বা কাপড় ইত্যাদি দ্বারা মাথা ঢেকে রাখার কথা সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়িন থেকে প্রমাণিত। এছাড়াও হাদিসে এসেছে- বিখ্যাত সাহাবি হজরত যুবায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একবার আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু লোকদের উদ্দেশে খুতবা দিতে গিয়ে বলেন, হে মুসলমানরা! তোমরা আল্লাহ তাআলার সঙ্গে লজ্জা বজায় রাখ। ওই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, নিশ্চয়ই আমি যখন প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য লোকালয় থেকে দূরে যাই, তখন আমি আমার রবের প্রতি লজ্জাবনত হয়ে মাথা ঢেকে নিই। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা)
- বাথরুমে প্রবেশ করার সময় খালি পায়ে না যাওয়া। জুতা-সেন্ডেল পায়ে দিয়ে প্রস্রাব-পায়খানায় যাওয়া অত্যান্ত জরুরি। (কানযুল উম্মাল)
- বাথরুমে প্রবেশ করার পরে কেবলার দিকে মুখ বা পিঠ দিয়ে না বসা। (বুখারি) এর অর্থ হচ্ছে পশ্চিম দিকে হয়ে বসে বাথরুম না করা।
- বাথরুমে প্রবেশ করার পরে বসার আগ মুহূর্তে কাপড় খুলে বসা। দাঁড়িয়ে প্রস্রাব না করা। (নাসাঈ, তিরমিজি)
- বাথরুমে প্রবেশ করার পরে প্রস্রাব ও নাপাক পানির ছিটা থেকে নিজেকে হেফাজতে রাখতে হবে বা সতর্ক থাকা। (বুখারি) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা প্রস্রাব থেকে পবিত্রতা অর্জন করো। কেননা বেশির ভাগ কবরের আজাব এ কারণেই হয়ে থাকে। (দারাকুতনি, মুসতাদরাকে হাকেম) তাই আমাদের এই নিয়ম কানুন গুলো মেনে চলা অত্যাবশকীয়।
- বাথরুমে প্রবেশ করার পরে প্রস্রাব-পায়খানার আগে ঢিলা-কুলুখ বা টয়লেট পেপার ব্যবহার করা। (বাইহাকি) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মলত্যাগ করার পর তিনটি ঢিলা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে। এরপর পানি দ্বারা ধৌত করা। (ইবনে মাজাহ)
- বাথরুম করার পরে বাম হাত দ্বারা ঢিলা ও পানি ব্যবহার করা। (বুখারি) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা টয়লেটে যাবে, তখন লজ্জাস্থান ডান হাতে স্পর্শ করবে না এবং ডান হাতে শৌচক্রিয়া করবে না। (মুসলিম)
- বাথরুম বা প্রস্রাব-পায়খানার জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা না থাকলে কিংবা না পেলে এমনভাবে প্রস্রাব-পায়খানা সম্পন্ন করা যাতে ছতর কারো নজরে না আসে। (আবু দাউদ)
- বাথরুম করার জন্য বা প্রস্রাবের জন্য নরম বা এমন স্থান খুঁজে নেয়া যেখান থেকে প্রস্রাবের ছিটা শরীরে বা কাপড়ে না লাগে। (আবু দাউদ)
- বাথরুম করার পরে ঢিলা-কুলুখ ব্যবহারের পর পানি ব্যবহার করা। (ইবনে খুযায়মা)
- আপনার বাথরুম করা শেষে অবশ্যই বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (আবু দাউদ)
- যখন প্রবল বাতাস হয় সেই বাতাসের দিকে ফিরে প্রস্রাব করা নিষেধ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রস্রাব করার ইচ্ছা করলে, সে জন্য একটা উপযোগী স্থান খুঁজে নেবে। যেমন- পর্দার দিকে লক্ষ্য রাখবে আর বাতাসের দিকে মুখ করে বসবে না (আবু দাউদ)
- আমাদের আরও বিশেষ কিছু নিয়ম মেন চলা অত্যান্ত জরুরি যেমন অজু ও গোসলের স্থানে কিংবা স্থির পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা না করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রবহমান নয় এমন স্থির পানিতে প্রস্রাব করবে না। যেমন-পুকুর, হাউজ ইত্যাদি। গোসলখানায় প্রস্রাব করবে না। (তিরমিজি)
- আপনি যখন বাথরুমে থাকবেন সেই সময় বা প্রস্রাব-পায়খানার সময় কথা না বলা। (মুসনাদে আহমাদ)
- আমাদের অনেকেরই এই ভুলটা হয়ে থাকে যেমন কোনো গর্তের, ছায়াদার গাছের নিচে, চলাচলের রাস্তায় প্রস্রাব না করা। (আবু দাউদ)
- আমরা যেনো কখনোই এই কয়েকটি দ্রব্য প্রস্রাব করার পরে ব্যবহার না করি যেমনঃ হাড্ডি, কয়লা, কাগজ, গাছের কাঁচা পাতা, খাদ্যদ্রব্য, শুকনো গোবর দ্বারা ঢিলা-কুলুখ তথা পবিত্রতা অর্জন না করা। (তিরমিজি)
- প্রস্রাব করা অবস্থায় কেউ সালাম দিলে আপনি পবিত্রতা অর্জনের পর তার জবাব দেবেন এটি মুস্তাহাব (যদি সালামদাতা উপস্থিত থাকে)। নতুবা প্রয়োজন সেরে এসে অজু বা তায়াম্মুম ছাড়াও জবাব দেয়া যাবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতেন। (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)
প্রসাবের পর সন্দেহের উদ্রেক হলে:
কারণ রাসূল স: থেকে বর্ণিত, « ﺑَﺎﻝَ ﺛﻢ ﻧَﻀﺢَ ﻓَﺮْﺟَﻪ »
আরও পড়ুনঃ
- খালিদ ফারহানের কোর্স সম্পর্কে জানতে হলে এখানে ক্লিক করুন।
- গুরুত্বপূর্ণ কিছু Connecting/Linking Words In English For IELTS সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
0 মন্তব্যসমূহ