আপনারা সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে যে বিষয়গুলো অনলাইনে বেশি সার্চ করে থাকেন সেগুলো হচ্ছে: সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া , সাইয়েদুল ইস্তেগফার pdf , সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া বাংলা উচ্চারণ , সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ , সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া ছবি , সাইয়েদুল ইস্তেগফার আরবী , সাইয়েদুল ইস্তেগফার অর্থ সহ , সাইয়েদুল ইস্তেগফার , সাইয়েদুল ইস্তেগফার ফজিলত , সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার নিয়ম , সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা , সাইয়েদুল ইস্তেগফার ছবি hd , সাইয়েদুল ইস্তেগফার pdf download , সাইয়েদুল ইস্তেগফার কি ?
সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে হাদিস , সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ , সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠের ফজিলত , সাইয়েদুল ইস্তেগফার আরবি , sayedul estegfar সাইয়েদুল ইস্তেগফার , সাইয়েদুল ইস্তেগফার এর ফজিলত কি , সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া pdf, সাইয়েদুল ইস্তেগফার mp3 download , দোয়া সাইয়েদুল ইস্তেগফার , সাইয়েদুল ইস্তেগফার সূরা , সাইয়েদুল ইস্তেগফার এর অর্থ , সাইয়েদুল ইস্তেগফার কোন সুরার আয়াত ?
আরও পড়ুনঃ পবিত্র কোরআনের ৯৯ নির্দেশনা সমূহ
সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ
আমরা জীবনে চলার পথে জেনে হোক বা না জেনে হোক অনেক সময় ছোট বড় অনেক ধরনের ভুল করে থাকি। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই ভুলগুলো শুধরে নেয়ার জন্য দুটি নিয়ামত দান করেছেন। একটি হচ্ছে ‘তওবা’ এবং অন্যটি হচ্ছে ‘ইস্তেগফার’। আমাদের প্রিয় নবী করীম (সা.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার তওবা ও ইস্তেগফার করতেন। আমরা আজ শুধু ইস্তেগফার সম্পর্কে আলোচনা করব।
ইস্তেগফার কি : ইস্তেগফার মানে হলো ‘ক্ষমা প্রার্থনা করা’। ইস্তেগফার করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার যেকোন গুনাহ মাফ করে দেন। ইস্তেগফার করার কয়েকটি ছোট দোয়া রয়েছে, তবে ইস্তেগফার করার সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দোয়া হচ্ছে ‘সাইয়েদুল ইস্তেগফার’। সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করার ফজিলত সবচেয়ে বেশি। ইস্তেগফার ৪টি দোয়া নিচে দেয়া হলো:
ইস্তেগফার দোয়া ১: আরবী: أَستَغْفِرُ اللهَ
বাংলা উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লাহ।
বাংলা অর্থ: ‘আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
প্রতি ওয়াক্তের ফরয নামাজের সালাম ফিরানোর পর রাসুলুল্লাহ (সা:) এই দোয়াটি ৩ বার পড়তেন। (মিশকাত: ৯৬১)
ইস্তেগফার দোয়া ২: আরবী: أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
বাংলা উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লা-হা ওয়া আতূবু ইলাইহি।
বাংলা অর্থ: ‘আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর দিকে ফিরে আসছি।’
আমাদের প্রিয় রাসুলুল্লাহ (সা:) প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তওবা ও ইস্তেগফার করতেন। (বুখারী: ৬৩০৭)
ইস্তেগফার দোয়া ৩: আরবী: رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ (الغَفُوْرُ)
বাংলা উচ্চারণ: রাব্বিগ্ ফিরলী ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আনতাত তাওয়া-বুর রাহীম। (‘গাফূর’)
বাংলা অর্থ: ‘হে আমার প্রভু, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান করুণাময়।’ রাসুলুল্লাহ (সা:) মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন। (আবূ দাঊদ: ১৫১৬, ইবনু মাজাহ: ৩৮১৪, তিরমিযী: ৩৪৩৪, মিশকাত: ২৩৫২)
ইস্তেগফার দোয়া ৪: আরবী: أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
বাংলা উচ্চারণ: ‘আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যূম ওয়া আতূবু ইলায়হি।’
বাংলা অর্থ: ‘আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, তিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছে তওবা করি।’
যুদ্ধক্ষেত্র হতে পলায়নকারীও হলেও এই দোয়া পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন। (আবু দাউদ: ১৫১৭, তিরমিযী: ৩৫৭৭, মিশকাত: ২৩৫৩)
সাইয়েদুল ইস্তেগফার কি : সাইয়েদুল ইস্তেগফার – سيدول استغفر দুইটি আরবী শব্দ নিয়ে গঠিত। সাইয়েদুল অর্থ হচ্ছে ‘শ্রেষ্ঠ’ বা সর্বশ্রেষ্ঠ’ এবং ইস্তেগফার অর্থ হচ্ছে ‘ক্ষমা প্রার্থনা করা’। সাইয়েদুল ইস্তেগফার মানে হলো ‘ক্ষমা প্রার্থনার সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া’। ইস্তেগফার একটি স্বতন্ত্র ইবাদত , যিনি ইস্তেগফার করেন তাকে আল্লাহ তায়ালা অনেক পছন্দ করেন।
সাইয়েদুল ইস্তেগফার আরবী : ( اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِيْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِيْ فَاغْفِرْ لِيْ فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ )
সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আন্তা রাব্বি, লা ইলাহা ইল্লা আন্তা, খলাকতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাস্তাত তু। আউযু বিকা মিন শাররি মা ছনাতু। আবুউ লাকা বি-নিমাতিকা আলাইয়া ওয়া আবুউ বি-জাম্বি, ফাগফির লি, ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ-জুনুবা ইল্লা আন্তা।’
সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া বাংলা অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনিই আমার প্রভু, আপনি ছাড়া আমার আর কোন মাবুদ নেই; আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন আর আমি আপনারই বান্দা; আমি যথাসাধ্য আপনার নিকট প্রদত্ত অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির ওপর বহাল থাকব; আমি যত মন্দ কাজ করেছি, ওই গুলোর কুফল থেকে বাঁচার জন্য আপনার আশ্রয় চাই; আমার ওপর আপনার যে অসংখ্য নিয়ামত রয়েছে, তার শোকর গুজর করি এবং আমি আমার পাপের স্বীকৃতিও প্রদান করি; অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন; গুনাহ মাফ করার ক্ষমতা আপনি ছাড়া আর কারও নেই।’
আরও পড়ুনঃ জানাজার নামাজের নিয়ম ২০২২
সাইয়েদুল ইস্তেগফার ফজিলত
বান্দার পাপমোচন, কল্যাণ ও জান্নাত লাভের অন্যতম একটি পথ হলো ইস্তেগফার। সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করার ফজিলত অনেক। সাইয়েদুল ইস্তেগফারের ফজিলত সম্পর্কে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুদৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সকালে সাইয়েদুল ইস্তিগফার পাঠ করবে, সে যদি সন্ধ্যা হওয়ার আগে মারা যায় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি সুদৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সন্ধ্যায় সাইয়েদুল ইস্তিগফার পড়ে সে যদি সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ – সহীহ বুখারী: ৬৩০৬
অর্থাৎ আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে কেউ যদি প্রতিদিন সকাল (ফজরের পরে) ও সন্ধ্যায় (আসর বা মাগরিবের পরে) সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করে আর সেদিনই মারা যায় তাহলে সে জান্নাতে যাবে।রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যাক্তি যত মুমিন বান্দার জন্য ইস্তিগফার করবে, সে ব্যাক্তি তাদের সমপরিমাণ নেকি লাভ করবে।’ (সিয়ারে কাবির, তাবরানি)
ইস্তিগফার সম্পর্কে কোরআনে আছে,’আর আল্লাহ তাআলা আজাব দেবেন না তাদের, আপনি তাদের মাঝে থাকা অবস্থায়; আর আল্লাহ তাদের আজাব দেবেন না, যখন তারা ইস্তিগফার করে।’ (সুরা-৮ আনফাল, আয়াত: ৩৩)
সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া কখন পড়তে হয়
একজন মুমিনের দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তির অন্যতম আশ্চর্যজনক উপায় হচ্ছে সাইয়েদুল ইস্তেগফার।কুরআনে মুমিনদের বারবার তাওবা ও ইস্তেগফার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইস্তেগফারের জন্য আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে পুরষ্কার হিসেবে দিবেন বরকত এবং আখিরাতে দিবেন জান্নাত। রাসূলুল্লাহ বলেছেন,( وَاللهِ إِنِّي لأَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ فِي الْيَوْمِ أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِينَ مَرَّةً. )
অর্থ: ‘আল্লাহর কসম! আমি দিনের মধ্যে ৭০ বারেরও বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাওবা করি।’ বুখারী (৮৩-কিতাবুদ দাআওয়াত, ৩-বাব ইসতিগফারিন নাবিয়্যি)
নবী করীম (সা.) প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করতেন। তাই আমাদেরও উচিত প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করা। এছাড়া দিনের যেকোন সময় উঠতে বসতে, যখনই মনে পড়বে বেশি বেশি করে সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া পড়ে আল্লাহর কাছে মাফ চাইবেন।
আরও পড়ুনঃ লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদরের ফজিলত ২০২২
সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার নিয়ম
সাইয়েদুল ইস্তেগফার একটি বরকতময় দোয়া । আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে এর উত্তম প্রতিদান দিয়ে থাকেন। আমরা আজকের পোস্টে ইতিমধ্যেই সাইয়েদুল ইস্তেগফার আরবী, সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থ এবং সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ জানিয়ে দিয়েছি। আপনারা এখান থেকে সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়াটি সংগ্ৰহ করে তাড়াতাড়ি মুখস্থ করে ফেলবেন, এতে আপনি যখন ইচ্ছা তখন দোয়াটি পড়তে পারবেন।
সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম-কানুন নেই। গুনাহর পর ইস্তেগফার করা ‘ওয়াজিব’ এবং নেক আমল করার পর ইস্তেগফার করা ‘মুস্তাহাব’ । সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার সময় নিচের বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখবেন:
পাক পবিত্রতা বজায় রাখা।
আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা।
প্রতিদিন সকালে ফজরের পরে এবং সন্ধ্যায় আসর বা মাগরিবের পরে সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করা উত্তম।
পবিত্রাবস্থায় দিনের যেকোন সময় যতবার ইচ্ছা ততবার সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করা যাবে।
ইস্তেগফারকারী ব্যাক্তিকে আল্লাহ ভীষণ পছন্দ করেন , তাই দিনে যতবার পারেন সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করুন।
সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে হাদিস
সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে হাদিস ও কোরআনের কয়েকটি বাণী নিচে তুলে ধরা হলো:
1.‘শয়তান বলল, হে রব! আপনার ইজ্জতের কসম! আপনার বান্দাদেরকে আমি পথভ্রষ্ট করতেই থাকব যতক্ষণ তাদের দেহে প্রাণ থাকবে। তখন আল্লাহ বললেন, আমার ইজ্জত ও জালালের কসম! আমিও তাদের ক্ষমা করতে থাকব যতক্ষণ তারা ইস্তেগফার করতে থাকবে-ক্ষমা চাইতে থাকবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১১২৩৭)
2.হাদীসে বর্ণিত আছে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সু-সংবাদ তার জন্য, যার আমলনামায় অধিক ইস্তেগফার পাওয়া যাবে।’ (ইবনে মাজাহ : ৩৮০৮)
3.পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে, ‘হে আমার কওম, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তেগফার করো অতঃপর তার কাছে তওবা করো, তাহলে তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাবেন এবং তোমাদের শক্তির সঙ্গে আরও শক্তি বৃদ্ধি করবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে বিমুখ হয়ো না।’ (সূরা হুদ : ৫২)
4.পবিত্র কোরআনে আছে, ‘আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তেগফার করো। তারপর তার কাছে ফিরে যাও, (তাহলে) তিনি তোমাদের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত উত্তম ভোগ-উপকরণ দেবেন।’ (সূরা হুদ : ৩)
5.সূরা নাসরে বর্ণিত আছে, ‘অতঃপর তোমার রবের প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করো এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো।’ (সুরা: নাসর, আয়াত: ৩)
6.পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাদের আজাব দানকারী নন এমতাবস্থায় যে, তারা ইস্তেগফার করছে।’ (সূরা আনফাল : ৩৩)
7.সূরা নামলে বলা হয়েছে, ‘কেন তোমরা আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার করছো না, যেন তোমাদের রহমত করা হয়?’ (সূরা নামল : ৪৬)
8.ইস্তিগফার সম্বন্ধে সূরা নূহে বর্ণিত আছে, ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি মহাক্ষমাশীল।’ (সূরা: নূহ, আয়াত: ১০)
9.পবিত্র কোরআনে লিপিবদ্ধ আছে, ‘এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনো কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনোভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গোনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া কেই বা আছে, যে গুণাহ ক্ষমা করতে পারে, এবং তারা জেনেশুনে তাদের কৃতকর্মে অবিচল থাকে না।’ (সূরা ইমরান: ৩/১৩৫)
10.মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত আছে, ‘বান্দা যখন বেশি বেশি ইস্তিগফার করে, আল্লাহ তার সকল দুশ্চিন্তা দূর করে দেন, সকল বাধা বিপত্তি থেকে বের করে আনেন এবং এমন স্থান হতে তাকে রিযিক প্রদান করেন, যা তার কাছে কল্পনাতীত ।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৪/৫৬)
আরও পড়ুনঃ রোজা ভঙ্গের কারণ ও রোজার মাকরুহ সমূহ
সাইয়েদুল ইস্তেগফার কোন সূরার আয়াত
গুগল সার্চে (Google search) আপনাদের আরেকটি জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন হচ্ছে সাইয়েদুল ইস্তেগফার কোন সূরার আয়াত ? প্রকৃতপক্ষে সাইয়েদুর ইস্তেগফার কোন সূরার আয়াত নয়। সাইয়েদুল ইস্তেগফার হচ্ছে একটি অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন দোয়া । সহীহ বুখারী শরীফের হাদিসে এই দোয়াটি পাওয়া গেছে।এই দোয়া পড়ে ইস্তেগফার করলে আল্লাহ রহমতে দুনিয়াতে বৃষ্টি বর্ষণ হয়। এছাড়া সাইয়েদুল ইস্তেগফারের বিভিন্ন ফজিলত সম্পর্কে আমরা পূর্বেই আলোচনা করেছি। তাই আপনারা আল্লাহর এই অশেষ রহমতের দোয়াটি বারবার পড়ার চেষ্টা করুন।
সাইয়েদুল ইস্তেগফার ছবি
প্রত্যেক মুসলিমের দিনে একবার হলেও সাইয়েদুল ইস্তেগফার তেলাওয়াত করা উচিত। এই দোয়ার সুফল ইহকাল এবং পরকাল দুই জায়গাতেই রয়েছে। সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়লে যেকোন বালামুসিবত দূর হয়। আমরা এতক্ষণ সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছি।
ইস্তেগফার সম্পর্কে আমাদের আজকের আলোচনা প্রায় শেষের পথে। অনেকেই ভাবেন সাইয়েদুল ইস্তেগফার অনেক কঠিন। আসলে অনলাইনে পড়ার সময় একটু কঠিন মনে হওয়াই স্বাভাবিক । আপনারা যদি সাইয়েদুল ইস্তেগফার ছবি ডাউনলোড করেন এবং সুবিধামত সময়ে মুখস্থ করে ফেলেন তাহলে আর কঠিন লাগবে না। তাই আপনাদের সুবিধার্থে সাইয়েদুল ইস্তেগফার কয়েকটি ছবি / hd pic নিচে দেয়া হলো:
সাইয়েদুল ইস্তেগফার pdf
সাইয়েদুল ইস্তেগফার pdf download লিংক
সাইয়েদুল ইস্তেগফার mp3 download
এই পৃথিবীর স্রষ্টা মহান আল্লাহ তায়ালা হলেন পরম দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। তিনি তার প্রিয় বান্দাদের অনেক ভালোবাসেন। তাই বান্দারা যখন কোন ভুল করে তার কাছে মাফ চায় তিনি ক্ষমা করে দেন। আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়ার একটি মাধ্যম হচ্ছে ‘সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া’। সাইয়েদুল ইস্তেগফার শোনা ও পাঠ করা উভয়ই সওয়াবের কাজ। তাই আমরা আপনাদের জন্য সাইয়েদুল ইস্তেগফার mp3 format সংগ্রহ করেছি। সাইয়েদুল ইস্তেগফার mp3 / অডিও ফাইলটি play করতে বা ডাউনলোড করতে google chrome দিয়ে নিচের লিংকটি open করুন।
সাইয়েদুল ইস্তেগফার mp3 download লিংক
সাইয়েদুল ইস্তেগফার ভিডিও
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী দোয়াগুলোর একটি সাইয়েদুল ইস্তেগফার। আয়েশা (রা.) এর ইন্তেকালের সময় হযরত মোহাম্মদ (সা.) ঘন ঘন একটি দোয়া করতেন। তিনি বলতেন, ‘ আল্লাহ সকল অপূর্ণতা থেকে মুক্ত এবং আমি তাঁর প্রশংসার মাধ্যমে শুরু করলাম। আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং আমি অনুতপ্ত হয়ে তাঁর কাছেই ফিরে যাই ‘- ( বুখারি ও মুসলিম)। তাই আমাদেরও ঘন ঘন মাফ চেয়ে আল্লাহর কাছেই ফিরে যাওয়া উচিত। এজন্য সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়া জরুরী। যারা সাইয়েদুল ইস্তেগফার ভিডিও খুঁজছেন বা দেখতে চান তারা নিচের লিংকে ভিডিওটি দেখতে পারেন।
সাইয়েদুল ইস্তেগফার ভিডিও লিংক
সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে FAQ
সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে FAQ বা সচারচর জিজ্ঞাসিত কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর নিচে দেয়া হলো:
প্রশ্ন ১: ইস্তেগফার ও সাইয়েদুর ইস্তেগফারের মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তর: ইস্তেগফার ও সাইয়েদুল ইস্তেগফারের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। ইস্তেগফার করার বেশ কয়েকটি দোয়া রয়েছে, এর একটি হলো ‘সাইয়েদুল ইস্তেগফার’। এটি ইস্তেগফার করার সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া । সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার ফজিলতও অনেক বেশি।
আরও পড়ুনঃ আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ Ayatul Kursi Surah
প্রশ্ন ২: সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার উপকার কি কি ?
উত্তর: সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার উপকার গুলো হলো:
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।
শিরক ছাড়া যেকোন গুনাহ মাফ হয়।
সকল বিপদ আপদ দূর হয়।
পরিবারে শান্তি আসে এবং সম্মান বৃদ্ধি পায়।
আল্লাহর রহমতে পৃথিবীতে বৃষ্টি বর্ষণ হয়।
ইস্তেগফার পাঠকারী কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন।
মৃত্যুর পর জান্নাত লাভ হয়/ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৩: তওবা ও ইস্তেগফারের মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তর: আল্লাহ নিকট ক্ষমা প্রার্থনার দুটি উপায় হলো তওবা ও ইস্তেগফার। তওবা ও ইস্তেগফারের মধ্যে পার্থক্য খুবই সামান্য। সাধারণত এই দুটি দোয়ার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে কোন পাপ করার পর তওবা করতে হয় কিন্তু পাপ না করলেও ইস্তেগফার করা যায় । এছাড়া তওবা কবুল হওয়ার ৩টি শর্ত রয়েছে কিন্তু ইস্তেগফার কবুল হওয়ার কোন শর্ত নেই। তওবা কবুলের ৩ টি শর্ত হলো: তৎক্ষণাৎ গুনাহ হতে বিরত থাকা, অতীতের গুনাহর জন্য লজ্জিত হওয়া ও অনুশোচনা করা এবং ভবিষ্যতে গুনাহ না করার দৃঢ় সংকল্প করা।
প্রশ্ন ৪: দিনে কয়বার সাইয়েদুর ইস্তেগফার পাঠ করব?
উত্তর: দিনে যতবার ইচ্ছা সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করা যাবে। তবে নামাজের পর ৩ বার ইস্তেগফার পড়া সুন্নত। আপনারা যত বেশি ইস্তেগফার পড়বেন তত বেশি সওয়াব পাবেন।
প্রশ্ন ৫: সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়লেই কি জান্নাত?
উত্তর: আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রেখে সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়লেই জান্নাত। আমাদের প্রিয় নবী হয়রত মোহাম্মদ (সাঃ) গ্যারান্টি দিয়েছেন, ‘আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে কেউ যদি এই দোয়া পড়ে এবং ঐদিনই মারা যায় , ইনশা’ আল্লাহ সে জান্নাতে যাবে।’ – (বুখারী )
আরও পড়ুনঃ সূরা দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ ২০২২
আমাদের শেষকথা
আমরা আজকের পোস্টে সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। যারা পুরো পোস্টটি পড়েছেন তারা এতক্ষনে ইস্তেগফার কি , ইস্তেগফার ৪ টি দোয়া , সাইয়েদুল ইস্তেগফার কি , সাইয়েদুর ইস্তেগফার আরবী , সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থ , সাইয়েদুল ইস্তেগফার ফজিলত , সাইয়েদুল ইস্তেগফার কখন পড়তে হয় , সাইয়েদুল ইস্তেগফার পড়ার নিয়ম , সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে হাদিস , সাইয়েদুল ইস্তেগফার কোন সূরার আয়াত , সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া ছবি , সাইয়েদুল ইস্তেগফার pdf , সাইয়েদুল ইস্তেগফার mp3 download , সাইয়েদুল ইস্তেগফার ভিডিও , সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে FAQ এবং সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ জেনে গেছেন।
এখন একজন মুসলিম হিসেবে আপনার কর্তব্য এই দোয়া সম্পর্কে অন্যকে জানানো। দ্বীন ইসলাম প্রচারের স্বার্থে আজকের পোস্টটি শেয়ার করে সবাইকে সাইয়েদুল ইস্তেগফার সম্পর্কে জানার সুযোগ দিন। আজকের ‘সহীহ শুদ্ধ সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ দেখুন’ পোস্ট সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানান।
0 মন্তব্যসমূহ