কারেন্সি সোয়াপ কি? এবং কারেন্সি সোয়াপ কাকে বলে? এই সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। কারেন্সি সোয়াপ হল যদি কোন দেশ বৈদেশিক মুদ্রা রিসিভারে পরিমাণ কম হয়। তাহলে সেই মুদ্রা ঐ দেশের কোন ব্যাংক অথবা বিদেশে কোন ব্যাংক থেকে কিছুদিনের জন্য ধার নেওয়া।
ধার নিয়ে সেই টাকা দেখার ওকে কারেন্সি সোয়াপ বলে। কারেন্সি সোয়াপ এর কিছু নিয়ম রয়েছে। সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করার মতো যদি অর্থ থাকে তাহলে সোয়াপের প্রয়োজন পড়ে না। সাধারণত টাকা এবং ডলারের মধ্যেই কারেন্সি সেোয়াপ হয়ে থাকে।
কারেন্সি সোয়াপ কি? সেই সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হলে সম্পূর্ণ কনটেন্টটি পড়ুন।
কারেন্সি সোয়াপ কি?
যদি কোন দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে করে তাহলে সর্বনিম্ন তিন মাসের আমদানি ব্যয় মজুদ থাকতে হয়। যদি সেই পরিমাণ সম্পদ না থাকে তাহলে তাকে কারেন্সি সোয়াব করতে হয়। কোন দেশীয় ব্যাংক বা বৈদেশিক ব্যাংক থেকে বৈদেশিক সত্য অনুযায়ী টাকা তাদের একাউন্টে দেখানো কে কারেন্সি সোয়াব বলা হয়।
কারেন্সি সোয়াপ কাকে বলে?
কারেন্সি সোয়াপ কি আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। যে কোন দেশের বাণিজ্যিক সত্য অনুযায়ী তিন মাসের টাকা মজুদ থাকতে হয়। এই টাকা অনেক সময় একাউন্টে থাকে না। এই কারণে বাণিজ্যিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই সমস্যা দূর করতে অন্য ব্যাংক থেকে ধার নেওয়া হয়। ধার নিয়ে টাকার পরিমাণ দেখানো কে কারেন্সি সোয়াপ বলে।
কারেন্সি সোয়াপ ব্যবস্থা কি?
কারেন্সি সোয়াপ কি ইতিমধ্যে জেনেছি। কিন্তু কারেন্সি সোয়াপ ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। বিশ্বের প্রতিটি দেশে কারেন্সি সোয়াপ করে। কারণ, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে কোন ধরনের চুক্তি করলে তিন মাসের আমদানি ব্যয় পূরণ করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ থাকতে হয়।
আরও পড়ুনঃ ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা
যদি কোন দেশের বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ না থাকে তাহলে বাণিজ্যিক চুক্তি বন্ধ হয়ে যায়। চুক্তি বন্ধ হওয়া রোধ করতে কারেন্সি সোয়াপ করতে হয়। সেই সময় বৈদেশিক কোন ব্যাংক বা দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাংক থেকে মুদ্রা ঋণ নিতে হয়। এই ঋণ নিয়ে বৈদেশিক চুক্তি বজায় রাখাকে কারেন্সি সোয়াপ ব্যবস্থা বলা হয়।
Swap কিভাবে কাজ করে?
কারেন্সি ঋণ করে কোন ধরনের চুক্তি করাকেই Swap বলা হয়। প্রায় সময় বৈদেশিক চুক্তির ক্ষেত্রে Swap করা হয়ে থাকে। এটা সাধারণত কয়েক মাসের জন্য হয়ে থাকে।
সোয়াপ হার কি?
ইতিমধ্যে আমরা সোয়াপ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। তবে সোয়াপ করার সময় কারেন্সি ঋণ করতে হয়। ঋণ করার সময় যে পরিমাণ সুদ দিতে হয় সেটাই সোয়াপের হার। সাধারণত সোয়াপ ওয়াব কয়েক মাসের জন্য হয়ে থাকে। এই কারণে এই সুদের হার কম হয়ে থাকে।
কারেন্সি সোয়াপ প্রাইস কিভাবে হয়:
কারেন্সি সোয়াপ সম্পর্কে আমরা সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছি। তবে কারেন্সি সোয়াপ প্রাইস কিভাবে কাজ করে সেটা আমরা অনেকেই জানিনা। আমরা জানি প্রাইস শব্দের অর্থ উপহার। যদি কোন দেশ কারেন্সি সোয়াপের সময় অর্থ কোন সুদ ছাড়া দেয় তাহলে সেটাই কারেন্সি সোয়াপ প্রাইস। এই সময় শুধু প্রধানিত কারেন্সি ফেরত দিতে হয়। কোন সুদ দিতে হয় না।
মুদ্রা বিনিময়ের গুরুত্ব:
মুদ্রা বিনিময়ের গুরুত্ব অনেক। কারণ প্রতিটি ক্ষেত্রেই মুদ্রার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আমাদের কাছে সেই সময় মুদ্রা থাকে না। সেই সময় কোন ব্যাংক থেকে বা এনজিও থেকে মুদ্রা বিনিময় করতে হয়। মুদ্রা বিনিময়ের ফলে খুব সহজেই মুদ্রার সমস্যা দূর করা যায়। তবে মুদ্রা বিনিময়ের সময় সত্য থাকে।
বর্তমান সময়ে মুদ্রা বিনিময় হয়ে থাকে সুদের মাধ্যমে। টাকার পরিমান এবং সময়ের উপর ভিত্তি করে সুদের হার নির্ধারিত হয়। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকেও মুদ্রা বিনিময় হয়ে থাকে।
বর্তমান swap rate কি?
আন্তর্জাতিক কোন শক্তির সময় যদি কারেন্সির ঘাটতে থাকে তাহলে কোন দেশ বা ব্যাংক থেকে কারেন্সি ঋণ নিতে হয়। সেই সময় ব্যাংকগুলো কে সুদ দিতে হয়। সেই সুদের হার কমবেশি হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে কারেন্সির সুদের হার কে swap rate বলে।
আরও পড়ুনঃ সোনালী ব্যাংক ডিপিএস আদ্যোপান্ত - ২০২৩
বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ কারেন্সি সোয়াপ এর সুদের রেট ২ শতাংশ হয়ে থাকে। অনেক সময় ৩ শতাংশ হয়ে থাকে।
সোয়াপ স্প্রেড হিসাব:
স্প্রেড হচ্ছে কোন কিছুর লেনদেনে। এই লেনদেনের হিসাব করতে হয় কাজের শুরুতেই। সোয়াপ করার সময় কোন দেশ বা ব্যাংক এর সাথে চুক্তি করতে হয়। সেই চুক্তিকেই সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখাকে সোয়াপ স্প্রেড হিসাব বলা হয়।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই হিসাব করতে হয়। কারণ কোন দেশ সত্য ছাড়া কোন ধরনের কারেন্সি ঋণ দেয় না।
Swapping কি এবং এর উদ্দেশ্য কি?
Swapping কি আমরা পূর্বেই জেনেছি। আবের উদ্দেশ্য হল কোন দেশের সাথে বড় ধরনের চুক্তি করা। বৈদেশিক যুক্তির সময় উল্লেখ থাকে সর্বনিম্ন তিন কিস্তির টাকা মজুর থাকতে হবে ব্যাংকে। যদি সেই পরিমাণ কারেন্সি যদি না থাকে তাহলে তাদের অন্য কোন দেশ বা ওই দেশের কোন ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হয়।
ঋণ নেওয়ার পর কারেন্সি সোয়াপ করা হয়। এর উদ্দেশ্য হল বৈদেশিক চুক্তি বজায় রাখা। কারণ কোন দেশ বৈদেশিক চুক্তি ছাড়া চলতে পারে না। এটাই হচ্ছে সোয়াপ এর প্রধান উদ্দেশ্য।
কারেন্সি সোয়াপ বাংলাদেশ:
বর্তমানে বাংলাদেশের কারেন্সি সোয়াপ করতে হয় না। তবে অন্য দেশকে সোয়াপ করতে সাহায্য করে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ শ্রীলঙ্কাকে ২৫ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শ্রীলংকা বাংলাদেশ থেকে ঋণ নিচ্ছে কারেন্সি সোয়াপ করার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশের কারেন্সি সোয়াপ এর প্রয়োজন পড়ে না।
পৃথিবীর সর্বোচ্চ মুদ্রা কোনটি?
বিশ্বের সর্বোচ্চ মুদ্রা কুয়েতি দিনার। কুয়েতি ১ দিনার সমান ৩.২৯ ডলার। কিন্তু কুয়েতি দিনারের দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও ডলার সকলের ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের সকল দেশেই ডলার চলে। বৈদেশিক যত চুক্তি হয় সকলের ডলারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এই কারণে পৃথিবীর সর্বোচ্চ মুদ্রা ডলারকেই ধরা হয়।
মুদ্রা বিনিময় বাজারের সাথে তুলনামূলক সুবিধা তত্ত্বের সম্পর্ক:
বর্তমান সময়ে অনেক ব্যাংক সুদে টাকা দিয়ে থাকে। এসব ব্যাংকের কারণে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। কারণ তারা কম সুদে অনেক টাকা ঋণ দিয়ে থাকে। যার কারণে খুব সহজেই ঋণ শোধ করা যায়। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মুদ্রা বিনিময় করছে।
আরও পড়ুনঃ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৩
কারণ যে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ থাকে তারা বিভিন্ন দেশে সুদের বিনিময় টাকা দিয়ে থাকে। এইসব মুদ্রা বিনিময় বাজারের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কারেন্সি সোয়াপ করতে পারছে। যার ফলে ওই সব দেশ উপকৃত হচ্ছে। এসব কারণে মুদ্রা বিনিময়ের বাজার সাথে তুলনামূলক সুবিধা তত্ত্বের সম্পর্ক রয়েছে।
শেষ কথা: কারেন্সি সোয়াপ কি এবং কারেন্সি সোয়াপ কাকে বলে
আমার বিশ্বাস সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ে থাকলে কারেন্সি সোযাপ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। কারেন্সি সোয়াপ এর কারণে অনেক অর্থনৈতিক দুর্বল দেশ সুবিধা পাচ্ছে। করন তারা কারেন্সির অভাবে বৈদেশিক চুক্তি করতে পারে না। কারেন্সি সোয়াপ এর কারণে এই সমস্যা থেকে দেশগুলো মুক্তি পাচ্ছে।
বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশ কারেন্সি সোয়াপ এর সাথে যুক্ত। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পন্ন লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
0 মন্তব্যসমূহ