আবহাওয়া কারণেও পানি কম বেশি হয় গরমের সময় পানি বেশি খেতে হয় কিন্তু ঠান্ডার সময় পানি খাওয়া হয় না। কারণ, ঠান্ডার সময় শরীর থেকে ঘাম বেরোয় না যার ফলে শরীর সতেজ থাকে তৃষ্ণা লাগেনা।
শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন কত লিটার পানি খাওয়া দরকার সে সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব। কারণ সঠিক মাত্রায় পানি পান না করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়।
অনেক সময় অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ কারণে শরীর সুস্থ রাখতে কতটুকু পানি প্রয়োজন সে বিষয় নিয়ে আসতে আলোচনা করব। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।
পানির উপাদান:
মানবদেহে পানির পরিমাণ:
পানির অপর নাম জীবন। এ প্রবাদটি পুরোপুরি সত্য। মানুষ ছাড়া বাঁচতে পারে না। একটা মানুষ শুধু পানি খেয়ে ১০ দিন বেঁচে থাকতে পারে। সকল জীব জন্তুর জন্যই পানির প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিদিন আমরা যে খাবার খাই পানি না খেলে সেটা হজম হবে না।
প্রতিদিন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের ৩ থেকে ৪ লিটার পানি খেতে হয়। না হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হবে। কিন্তু পানির পরিমাণ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম ঝরে যার ফলে তৃষ্ণা লাগে। গরমের সময় শারীরিক পরিশ্রম করলে বেশি পরিমাণে ঘাম ঝরে। ওই সময় একজন ব্যক্তির ৫ লিটার পানি খেতে হয়। কিন্তু শীতের সময় পানি কম খেতে হয়।
কারণ শীতের সময় শরীর থেকে ঘাম বের হয় না যার ফলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয় না। এসব কারণে পানি খেতে ইচ্ছা করে না। শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন কত লিটার পানি খাওয়া দরকার উপরের আলোচনা থেকে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন।
বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজনীয়তা: শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন কত লিটার পানি খাওয়া দরকার
শরীর সুস্থ রাখতে অবশ্যই বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পানি থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু ছড়ায়। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে হয়। এ কারণে সবসময় বিশুদ্ধ পানি পান করতে হয়। না হলে রোগজীবাণু আক্রমন করবে।
আরও পড়ুনঃ ব্ল্যাক কফি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
পানি আমাদের শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। মানুষের দেহের তিনভাগের একভাগ পরিমাণ পানি রয়েছে। যদি বিশুদ্ধ পানি পান না করলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ডায়রিয়া হলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এ কারণে পানি খাওয়ার আগে সেটা দেখে নিতে হবে পানি বিশুদ্ধ কিনা। যদি মনে হয় পানিতে জীবন রয়েছে তাহলে অবশ্যই পানি ফিল্টারিং করবেন অথবা ফুঁটিয়ে নেবেন। তাহলে পানিতে জীবাণু পরিমাণ কমে যায়।
পানি পানের উপকারিতা:
পানি পান করার সঠিক সময় | শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন কত লিটার পানি খাওয়া দরকার
- সকালে খালি পেটে পানি পান অনেক উপকার হয়েছে। খালি পেটে পানি খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয় এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু পেট থেকে বেরিয়ে আসে।
- খাবার খাবার পানি পান করা ঠিক না। কারণ খাবার সময় পানি পান করলে মুখ থেকে লালা নিঃসরণ হয় সেটা কমে যায়। যার ফলে খাবার খেত সমস্যা হয় এবং হজম এর ব্যাঘাত ঘটে। এ কারণে খাবার খাওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর পানি খাওয়া উচিত।
- কাজ করার পর সাথে সাথে পানি খাওয়া ঠিক না। কারণ, কাজ করার ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ উত্তেজিত থাকে। এই সময় পানি পান করলে পেটের সমস্যা হয়। অনেক সময় কিডনির সমস্যা দেখা দেয়। কাজ শেষ করে কিছুক্ষণ পর পানি খাওয়া উচিত।
শারীরিক গঠন অনুযায়ী পানি পরিমাণ:
শিশুদের কম পরিমাণ পানি খেলে কি হয়। কারণ, শিশুরা তরল জাতীয় খাবার বেশি খায় এবং এদের শরীর ছোট থাকে। যার ফলে পানি কম খেতে হয়। আবার বৃদ্ধ মানুষদের পানি কম খেতে হয়। কারণ তারা কাজ করতে পারেনা।
পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর উপায়:
- সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি খেতে হবে। প্রথম প্রথম ভালো লাগবে না কয়েকদিন হওয়ার ফলে অভ্যাসে পরিণত হবে।
- যখন যে কাজ করবেন সাথে একটি পানির বোতল রাখবেন। কাছে পানি থাকলে পানি খাওয়ার কথা মনে পড়বে। এইভাবে পানি খাওয়ার অভ্যাস হবে।
- প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করার ফলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম বের হয়। যার ফলে শরীরে পানির ঘাটতি হয় এবং পিপাসা লাগে। এইভাবে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব।
- রাতে ঘুমানোর সময় পাশে পানি রাখতে হবে। তাহলে ঘুমানোর আগে পানি হওয়ার কথা মনে পড়বে। এভাবে পানি খাওয়ার ফলে অভ্যাসে পরিণত হবে।
বেশি পানি খাওয়ার উপকারিতা | শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন কত লিটার পানি খাওয়া দরকার
- অতিরিক্ত পানি খাওয়ার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ করে কিডনি। অতিরিক্ত পানি খাওয়ার ফলে কিডনির ওপর চাপ পড়ে। ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার ফলে অনেক সময় প্রস্রাবের ধারে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- অতিরিক্ত পানি খাওয়া প্রচুর পরিমাণে শরীর ঘামে। ঘামের সাথে শরীর থেকে বের আয়োডিন হয়ে যায়। যার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। এই কারণে স্বাভাবিক পরিমাণ পানি খেতে হবে।
- অতিরিক্ত পানি খাওয়ার ফলে অনেক সময় মেদ বাড়ে। কারণ পানি খাওয়ার ফলে পেট ফুলে থাকে। আস্তে আস্তে পেটের আকার বড় হয়ে যায়। এভাবে শরীরে মেদ জমে এবং ওজন বৃদ্ধি পায়।
0 মন্তব্যসমূহ