বাংলাদেশের দেখার মত অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো সাজেক ভ্যালি। সাজেক ভ্যালিতে যতদূর চোখ চাই শুধু সবুজের সমাহার। তার মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য ছোট বড় পাহাড়। শহর থেকে সেখানে গেলে নিজেকে অন্য গ্রহের মানুষ মনে হয়।
পর্যটন শব্দের অর্থ কি?
পর্যটনের ইংরেজি শব্দ Tourism। পর্যটন এক ধরনের বিনোদন। অবসর সময় অথবা ব্যবসার উদ্দেশ্যে এক স্থান থেকে অন্যস্থান বা এক দেশ থেকে অন্য দেশ সফর করাকে পর্যটন বলা হয়। ইতিপূর্বে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পর্যটন দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।
পর্যটনের গুরুত্ব কি?
পর্যটনের গুরুত্ব অনেক। কারণ পর্যটকের সাথে অনেক মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। কোন ব্যক্তি সফরে গেলে তার সাথে অনেক মালামাল থাকে। এবং তাদের থাকার এবং খাবার প্রয়োজন পড়ে। এসবের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের মোট জাতীয় আয়ের ৫% আসে পর্যটন খাত থেকে। এখানে সেবা প্রদান করার জন্য অনেক লোক জড়িয়ে আছে। এসব থেকে বোঝা যায় পর্যটালে গুরুত্ব অনেক।
সাজেক দেখতে কেমন?
বাংলাদেশ দেখার মত অনেক সুন্দর সুন্দর স্থান রয়েছে। তবে এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কক্সবাজারে এবং সাজেক। প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় সাজেকে। যেই দিকে চোখ চাই সেই দিকে শুধু সবুজে সমাহার। এর মধ্যে মাথা তুলে দাড়িয়ে আছে অসংখ্য পাহাড়।
সেখানে গেলে তুলার মত মেঘের সাথে দেখা হয়। পাহাড়ের চূড়ায় উঠার পর নিচে তাকালে অসংখ্য মেঘ দেখা যায়। এছাড়াও সূর্যোদয় দেখা যায় অনেক সুন্দর ভাবে। সাজেক কংলাক পাড়া থেকে কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তিস্থল দেখা যায়। ভারতের লুসাই পাড়া কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তি।
সকল ধরনের সৌন্দর্য একই সাথে উপভোগ করতে চাইলে অবশ্যই সাজেক যেতে হবে। প্রকৃতির সকল সৌন্দর্য একই সাথে উপভোগ করতে চাইলে অবশ্যই সাজেক যেতে হবে। সাজেক রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত।
সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান:
প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে সাজেক ভ্যালি যেতে হবে। কারণ প্রকৃতির সকল ধরনের সৌন্দর্য সেখানে রয়েছে। এখানে দেখার মত অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। নিম্নে, সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান গুলো তুলে ধরা হলো:
- রুইলুস পাড়া
- কংলাক পাড়া
- স্টোন গার্ডেন
- হ্যালিপ্যাড
- লুসাই গ্রাম
রিসোর্ট হোটেল | Sajek কি?
বাংলাদেশের উন্নতম পর্যটন স্থান সাজেক ভ্যালি। সাজেক ভ্যালি একদিনে ঘুরে সকল কিছু দেখা সম্ভব না। এই কারণে সাজেক গিয়ে থাকতে হয়। বর্তমানে রিসোর্ট হোটেল রয়েছে সাজেক ভ্যালিতে। সেখানে নিরাপদে রাত কাটানো যায়। রিসোর্ট হোটেলের পরিবেশের উপরে ভাড়া নির্ধারণ হয়ে থাকে।
সাজেক হোটেল লিস্ট:
বর্তমানে সাজেক ভ্যালিতে অনেক হোটেল তৈরি হয়েছে। সেখানে নিরাপদে রাত কাটানো যায়। নিম্নে, সাজেক হোটেল লিস্ট তুলে ধরা হলো:
- সাজেক রিসোর্ট
- রিসোর্ট রুংরাং
- মেঘ ম্যাচাং
- রুন্ময় রিসোর্ট
- ঘেঘপুঞ্জ রিসোর্ট
- জুমঘর রিসোর্ট
- ম্যাডভেঞ্জার রিসোর্ট
- হাফং তং
- মেঘ বাড়ি হিল কটেজ
- আলো কটেজ
- সাম্পারি রিসোর্ট
- পাহাড়িকা রিসোর্ট
- সালকা রিসোর্ট
- হিল কটেজ
- রক প্যারাডাইস
- আদিবাসী ঘর
সাজেক ভ্যালি হোটেল বুকিং:
বর্তমানে ফোনের মাধ্যমে সাজেক ভ্যালির হোটেল বুকিং করা সম্ভব হচ্ছে। এর জন্য হোটেলের নাম্বারের প্রয়োজন। নিম্নে সাজেক ভ্যালির হোটেলের নাম এবং নম্বর তুলে ধরাহলো:
- সাজেক রিসোর্ট = 01769-302370, 01859-025694, 01847-070395
- রিসোর্ট রুংরাং = 01869-64989817, 01632-698158
- মেঘ ম্যাচাং = 01822-168877
- রুন্ময় রিসোর্ট = 01865-476880
- মেঘপুঞ্জ রিসোর্ট = 01884-208060
- জুমঘর রিসোর্ট = 01884-208060
- ম্যাডভেঞ্জার রিসোর্ট = 01885-424242
- হাফং তং = 01875-999678
- মেঘ বাড়ি হিল কটেজ = 01867-223355
- আলো রিসোর্ট = 01841-000645
- সাম্পারি রিসোর্ট = 01849-889055
- পাহাড়িকা রিসোর্ট = 01724-658766, 01871-771777
- সালকা রিসোর্ট = 01847-658766, 01871-771777
- হিল কটেজ = 01632-698158
- রক প্যারাডাইস = 01855470477
ঢাকা থেকে সাজেক বাস ভাড়া কত?
ঢাকা থেকে সাজেক যাওয়ার জন্য প্রথমে খাগড়াছড়ি শহরে নামতে হয়। কারণ খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক অনেক কাছে হয়। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি বাসে যেতে হয়। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির নন এসি বাস ভাড়া ৭৫০ টাকা। এবং এসি বাসের ভাড়া ১৪০০ টাকা।
খাগড়াছড়ি শহরের নামের পর সাজেক যেতে হয়। তার জন্য আলাদা ভাড়া প্রদান করতে হয়। তবে সময়ের ব্যবধানে ভাড়া কম বেশি হতে পারে। কারণ রাঙ্গামাটির যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
কক্সবাজার থেকে সাজেক ভাড়া কত?
কক্সবাজার থেকে সাজেক যেতে হয় খাগড়াছড়ি দিয়ে। কক্সবাজার থেকে খাগড়াছড়ি রুটে শান্তি পরিবহনের বাস চলাচল করে। সকাল ৯ টা ও দশটায় খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে বাস রওনা হয় কক্সবাজার থেকে। কক্সবাজার থেকে খাগড়াছড়ি বাস ভাড়া ৫৫০ টাকা।
সাজেক ভ্রমণের উপযুক্ত সময় কখন?
প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য দেখতে হলে সাজেক যেতে হবে। সাজেক ভ্যালি তিনটি পড়া নিয়ে গঠিত রুইলুইপাড়া, হামারিপাড়া ও কংলাকপাড়া। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে সাজেক যেতে হবে শরৎ ও হেমন্ত কালে। এই সময় চারিদিক মেঘে ঢাকা থাকে।
সাজেক ভ্যালি রিসোর্ট মূল্য তালিকা:
সাজেক ভ্যালিতে অনেক রিসোর্ট রয়েছে। তাদের রেসোর্টের পরিবেশ অনুযায়ী মূল্য তালিকা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকা থেকে শুরু হয় রিসোর্ট ভাড়া। ডবল বেডের রুম ২০০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকার মত। এবং ফ্যামিলি সাইজ বেড রুম ভাড়া ১৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা।
সময়ের ব্যবধানে ভাড়া কম বেশি হতে পারে। এছাড়াও অনেক উন্নতমানের রিসোর্ট তৈরি হচ্ছে এবং তাদের সেবা অনেক উন্নতমানের। যার কারনে ওদের ভাড়া একটু বেশি হয়ে থাকে।
সাজেক ভ্যালি রুম ভাড়া কত?
উপরে সাজেক হোটেল লিস্ট তুলে ধরা হয়েছে। এবং সাজেক ভ্যালির রুম ভাড়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। একজন সিঙ্গেল রুমে থাকলে ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়া। ডাবল বেডের ভাড়া ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা।
সাজেকের সবচেয়ে ভালো রিসোর্ট:
বর্তমানে সাজেক ভ্যালিতে অনেক রিসোর্ট তৈরি হয়েছে। ভালো মানের রিসোর্ট এর লিস্ট উপরে তুলে ধরা হয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে সাজেক ভ্যারির সবচেয়ে ভালো মানের রিসোর্ট হচ্ছে মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট। রিসোর্টের সৌন্দর্য এবং ডেকোরেশন অন্য সকল রিসোর্ট থেকে উন্নত।
সাজেক হোটেল বুকিং প্রাইস:
সাজেক হোটেল বুকিং প্রাইস সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই। সাজেকে দুই ধরনের রিসোর্ট পাওয়া যায়।রিসোর্টে উডেন ও ব্যাম্বো এই দুই ধরনের সর্বমোট পাঁচটি কটেজ পাওয়া যায়। তবে এর বুকিং প্রাইস কম বেশি হয়ে থাকে। সাধারণ দিনে এর ভাড়া থাকে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা।
ছুটির দিনে বুকিং প্রাইস বেশি হয়। এই সময় ৪০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা দিতে হয়। এসব রিসোর্ট থেকে খুব সহজে মেঘ উপভোগ করা যায়।
0 মন্তব্যসমূহ