হলুদ আমাদের সকলে কাছে পরিচিত। হলুদ সাধারণত রান্নার কাজে ব্যবহার হয়। তবে হলুদে ঔষুধি গুণ রয়েছে। হলুদ খেলে অনেক ধরণের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কাঁচা হলুদ শরীরে ইমিউনিটি বাড়ায় ও সর্দিকাশি থেকে মুক্তি দেয়।
কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায় অনেকে জানতে চাই। বর্তমান সময়ে কাঁচা হলুদ রূপচর্চা ব্যবহার হচ্ছে। নিয়মিত কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। এবং ত্বক ফর্সা করে এবং দাগ দূর করে। নিম্নে, কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায় বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
কাঁচা হলুদ এর কাজ কি?
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে কাঁচা হলুদে। যা অ্যানিমিয়া রোগের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। এছাড়াও কাঁচা হলুদের কারকিউমিন রয়েছে। যা লোহিত রক্ত কণিকা রক্ষা করে।
এছাড়াও তাহলে আমাদের শরীরের ইমিউনিটি বাড়ায়। কাঁচা হলুদ ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি- কাশি কমাতে সাহায্য করে।
হলুদের উপকারিতা কি?
হলুদের উপকারিতা কি? অনেকেই জানতে চাই। হলুদের অনেক গুনাগুন রয়েছে। নিয়মিত হলুদ খেলে এবং ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। নিম্নে, হলুদের উপকারিতা তুলে ধরা হলো;
- ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- হজমের সমস্যা দূর করে।
- হৃদ্যন্ত্রকে রক্ষা করে।
- হৃদ্যন্ত্রকে রক্ষা করে।
- আর্থ্রাইটিসের ব্যথা হ্রাস করে।
- মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত সমস্যা দূর করে।
- যকৃৎ সুরক্ষিত রাখে সাহায্য করে।
- নিয়মিত পিরিয়ড নিশ্চিত করে সাহায্য করে।
- শ্বাসক্রিয়াকে শক্তিশালী করে।
কাঁচা হলুদ মাখলে কি হয়?
কাঁচা হলুদ রূপচর্চার জন্য প্রাচীন কাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। কাঁচা হলুদ বিভিন্ন কারণে শরীরে মাখা হয়। কাঁচা হলুদ মাখলে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের দাগ নিরাময় করে। কোন স্থানে ক্ষত হলে হলুদ লাগালে খুব সহজে ভালো হয়ে যায়।
হলুদের অনেক ঔষুধি গুন রয়েছে। বিশেষ করে কাঁচা হলুদ ত্বকের জন্য অনেক উপকার। নিয়মিত মুখে এবং গলায় কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে ত্বক ফর্সা হয়। এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
কাঁচা হলুদ দিয়ে রূপচর্চা:
হলুদ একটি মশলাজাতীয় পণ্য। তবে প্রাচীন কাল থেকেই কাঁচা হলুদ রূপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে। কাঁচা হলুদ গায়ের রং উজ্জ্বল করে। এবং ব্রণ, র্যাশ, পোড়া দাগ, ব্রণের দাগ ইত্যাদি দূর করে।
কাঁচা হলুদ দিয়ে রূপচর্চা করলে ত্বকের ভিতরে এবং উপরের জন্য ভালো। কাঁচা হলুদের প্যাক বানানোর দুই দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। দুইদিন পার হয়ে গেলে সেটা ফেলে দিতে হবে।
নয়তো এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে কাঁচা হলুদের প্যাক তৈরি করার কিছু নির্দিষ্ট ফর্মুলা রয়েছে। নিম্নে ফর্মুলা তুলে ধরা হলো।
কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায়?
কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায়? অনেকেই জানতে চায়। কাঁচা হলুদ দিয়ে ফর্সা হওয়ার জন্য কাঁচা হলুদের প্যাক তৈরি করতে হবে। ত্বকের ধারণা অনুযায়ী প্যাক তৈরি করতে হবে।
বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কাঁচা হলুদের সঙ্গে কাচা দুধ, বেসন, মধু ও লেবু ব্যবহার করতে পারেন। নিম্নে রূপচর্চায় কাঁচা হলুদের বিভিন্ন ব্যবহার তুলে ধরা হলো:
- তৈলাক্ত ভাব দূর করতে কাঁচা হলুদ ও ময়দার সঙ্গে পানি মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে হবে। এবং শুকিয়ে গেলে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে তৈলাক্ত ভাব দূর হয় এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে কাঁচা হলুদ অনেক কার্যকরী। কাঁচা হলুদের সঙ্গে গাজরের রস, বেসন এবং জলপাই তেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। এতে করে ত্বকের উত্তরাতে বৃদ্ধি পায়।
- হলুদ ও মধুর মিশ্রণ ত্বকের ভেতরের আদ্রতা বজায় রাখে।
- কাঁচা হলুদ এবং নারকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান। এই মিশ্রণ ত্বকের মোশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
- কাঁচা হলুদ চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
পরিশেষে বলা যায় নিয়মিত কাঁচা হলুদের প্যাগ ব্যবহার করলে ত্বক ফর্সা হয়। তাই রূপচর্চা করতে নিয়মিত কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন।
শুধু কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার নিয়ম:
কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায় অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে। শুধু কাঁচা হলুদ ব্যবহার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। তবে শুধু কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার নিয়ম জানতে হবে। কাঁচা হলুদ ব্যবহারের জন্য ভালোভাবে হলুদ পরিষ্কার করে নিতে হবে।
এরপর কাঁচা হলুদ ভালোভাবে বেটে নিতে হবে। তারপর মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। মুখ পরিষ্কার করার পর বাটা কাঁচা হলুদ মুখে লাগাতে হবে। নিয়মিত কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার ফলে ত্বক ফর্সা হয়। এবং ত্বকের কোন ধরনের সমস্যা থাকলে দূর হয়ে যায়।
ত্বকে কাঁচা হলুদের ব্যবহার:
ইতিপূর্বে ত্বকে কাঁচা হলুদের ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ত্বক ফর্সা করতে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ নিরাময় করতে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করা হয়।
নিয়মিত ত্বকে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে করে ত্বকের কোন ধরনের সমস্যা হয় না।
স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায়:
আমাদের গায়ের রং সৃষ্টিকর্তা কাছ থেকে পাওয়া। এটা চাইলে আমরা পরিবর্তন করতে পারি না। তবে রূপচর্চার মাধ্যমে একটু উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায়। স্থায়ী ভাবে ফর্সা হওয়ার জন্য কিছু উপাদান রয়েছে। যেগুলো একসাথে ব্যবহার করলে তবে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে দেখতে ফর্সা লাগে।
ভাই ভাই ফর্সা হওয়ার উপায় হচ্ছে, দুধ, কাঁচা হলুদ, লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে পেস্ট ফেসে লাগাতে হবে। নিয়মিত এই পেস্ট লাগালে ত্বক ভিতর থেকে উজ্জ্বল হয়। যার ফলে স্থায়ী ভাবে ফর্সা হওয়া যায়।
কাঁচা হলুদ গুড়া করার নিয়ম: কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায়
হলুদ একটি মসলা জাতীয় পণ্য। কাঁচা হলুদ গুঁড়ো করে মসলা হয়ে যাবে ব্যবহার করা হয়। কাঁচা হলুদ গুঁড়ো করার নিয়ম রয়েছে। প্রথমে কাঁচা হলুদ গরম পানিতে সিদ্ধ করতে হয়। তারপর হলুদ রোদে শুকাতে হয়। ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে তারপর গুঁড় করার জন্য প্রস্তুত হয়।
হলুদ ভালোভাবে শুকানোর পর মেশিনের মাধ্যমে গুঁড় করতে হয়। তারপর তারপর সেই হলুদ রান্নায় ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত হয়। সাধারণত এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাঁচা হলুদ গুঁড়ো করা হয়।
কাঁচা হলুদ মাথায় দিলে কি হয়?
মাথায় কাচা হলুদ দিলে খুকশি দূর হয়। হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল রয়েছে। এই উপাদান গুলো মাথার খুকশি দূর করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও কাঁচা হলুদ মাথায় ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের সমস্যা দূর হয়ে যায়। এর ফলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
হলুদ কি স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে:
কাঁচা হলুদ স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত কাঁচা হলুদ খেলে অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনশিয়া-সহ মস্তিষ্কের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়। আমাদের বয়স বাড়লে স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে এবং কোষ মস্তিষ্কের নতুন কোষ তৈরি বন্ধ হয়ে যায়।
তবে নিয়মিত কাঁচা হলুদ খেলে মস্তিষ্কের নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই বলা যায় কাঁচা হলুদ মস্তিষ্কের জন্য অনেক উপকারী।
নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ মুখে দিলে কি হয়:
নিম পাতাও কাঁচ হলুদ মুখে দিলে অনেক উপকার পওয়া যায়। নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ মুখে ব্যবহার করলে ব্রণ ও ব্রণ এর দাগ দূর করে। এছাড়াও নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
ব্রণ দূর করতে কাঁচা হলুদ:
ব্রণ দূর করতে কাঁচা হলুদ অনেক কার্যকরী। কাঁচা হলুদরে সাথে নিম পাতার রস ব্যবহার করলে খুব সহজে ব্রণ এবং ব্রণ এর দাগ দূর হয়ে যায়। তবে ত্বক পরিস্কার করে ব্যবহার করতে হবে।
কাঁচা হলুদের ক্রিম:কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায়
কাঁচা হলুদ সম্পকে আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি। কাঁচা হলুদের ক্রিম ব্যবহার করলে ত্বকের অনেক সমস্যা দূর হয়ে যায়। বিশেষ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
বর্তমান সময়ে বাজারে কাঁচা হলুদের ক্রিম পাওয়া যায়। তবে বাসায় তৈরি করে ব্যবহার করাই উত্তম। এতে করে ত্বকের কোন সমস্যা হয় না।
রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার:
রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার মানুষ প্রাচীন কাল থেকে করে আসছে। কাঁচা হলুদ ও দুধ একত্রে মিশ্রণ করে তোকে লাগালে তবে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এই মিশ্রণ ব্যবহার করা হয় তৈলাক্ত ত্বকের জন্য।
দুধও কাঁচা হলুদের মিশ্রণ ব্যবহার করলে তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায়। এবং ত্বক ভিতর থেকে পরিষ্কার হয়। যার ফলে ত্বক ফর্সা হয়। তাই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নিয়মিত এই মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।
স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায়:
সকলে চাই নিজেকে সুন্দর দেখাতে। তাই বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক পণ্য ব্যবহার করে থাকে। তবে ভাই হবে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় রয়েছে।
সঠিকভাবে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করলে স্থায়ী ভাবে ফর্সা হওয়া যায়। ভাই ভাই ফর্সা হওয়ার জন্য যেসব তবে ব্যবহার করতে পারেন সেসব হল:
- কাঁচা হলুদ ও দুধ
- কাঁচা হলুদ ও মধু
- কাঁচা হলুদ ও নিম পাতা
- কাঠ বাদামের তেল
- টমেটো
- গোলাপ জল
- অ্যালোভেরা
- আলুর রস
- চন্দন
- শসা
মুখে হলুদ দিলে জ্বলে কেন?
অনেকেই জানতে চাই মুখে হলুদ দিলে জ্বলে কেন? অনেকের মুখে এলার্জি রয়েছে। যার কারণে হলুদ ব্যবহার করলে মুখ জ্বলে। এছাড়াও যদি যেসব পাত্রে মরিচ রাখা হয় সেসব পাত্রে হলুদ বাটা রাখলে মুখ জ্বলতে পারে। এছাড়াও শিল-পাটায় হলুদ বাটলে মুখ চলতে পারে।
শেষ কথা: কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ফর্সা হওয়া যায়
সকলে চাই নিজেকে সবার থেকে সুন্দর দেখাতে। যার কারণে সবাই রুপচর্চা করে থাকে। ঘরোয়া ভাবে রূপচর্চার জন্য সবচেয়ে ভালো উপাদান হচ্ছে কাঁচা হলুদ। কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে ত্বকের দাগ দূর হয় এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
যার ফলে দেখতে ফর্সা লাগে। তবে নিয়মিত কাঁচা হলুদ ব্যবহার না করলে ভালো ফল পাওয়া যায় না। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
0 মন্তব্যসমূহ