বাজপাখির বৈশিষ্ট্য, বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায়

বাজপাখির নাম শুনেনি এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে। বাজপাখি একটি শিকারী পাখি। বাজপাখি মূলত ছোট জীবজন্তু স্বীকার করে থাকে। এই পাখিটি আকারে মাঝারী আকৃতির হয়ে থাকে। এই পাখিটির ক্ষিপ্রতা অন্য সকল পাখির তুলনায় অনেক বেশি।

বাজপাখির বৈশিষ্ট্য, বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায়

বাজপাখির বৈশিষ্ট্য, বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায় এই বিষয়ে জানার আগ্রহ অনেকেরই রয়েছে। কারণ অনেক মানুষ বাজপাখি পালনের জন্য আগ্রহী। কিন্তু সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণে পাখিটি পালন করতে পারে না। নিম্নে, বাজপাখির বৈশিষ্ট্য, বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

    বাজপাখি মানে কি?

    বাজপাখি একটি পাখির নাম। এর একটি শিকারী পাখি। বাজপাখি কে ক্ষিপ্রতার প্রতীক বলা হয়। কারণ অন্য সকল শিকারি পাখির তুলনায় এর গতি অনেক বেশি। এরা খুব সহজেই শিকার করতে পারে। শিকারী পাখি হিসেবে বিশ্বের সকল দেশে পরিচিত বাজপাখি।

    বাজপাখির বৈশিষ্ট্য:

    বাজপাখি একটি মাঝারি আকারের পাখি। একটি পূর্ণবয়স্ক বাজপাখির ওজন সর্বোচ্চ ২ কেজি হয়ে থাকে। পূর্ণবয়স্ক বাজপাখি ১৮ থেকে ২৫ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। এবং এদের দুই ডানার দৈর্ঘ্য ৩ ফিট থেকে ৪ ফিট হয়ে থাকে। পুরুষ বাজপাখির তুলনায় নারী বাজপাখি আকারে বড় হয়ে থাকে।


    বাজ পাখির দৃষ্টিশক্তি অনেক প্রখর। এরা ডিম পাড়ে এবং ডিম থেকে বাচ্চা উঠায়। এরা পা এবং ঠোঁটের সাহায্যে শিকার করে থাকে। বাজপাখি অনেক গতি সম্পন্ন একটি পাখি। এরা ঘন্টায় ৩৫০ কিলোমিটার গতিতে উড়তে পারে। এরা বিভিন্ন ধরনের পশুপাখি শিকার করে থাকে। 

    বাজপাখির গড় আয়ু কত?

    বাজ পাখির গড় আয়ু কত? এই বিষয় নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। অনেকে বলে থাকে বাজপাখি ৭০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। তবে বিভিন্ন গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়। বাজপাখি গড় ১৩ বছর। তবে কিছু বাজপাখি ১৬ বছর থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।

    বাজপাখির ব্যক্তিত্ব কেমন?

    বাজপাখি অনেক শান্ত প্রকৃতির একটি পাখি। এরা অনেক ক্ষুধা সহ্য করতে পারে। এরা ক্ষুধা না লাগলে শিকার করে না। এরা সাধারণত ছোট পাখি, কাঁঠবিড়াল, মাছ, খরগোশ এসব ছোট প্রাণী শিকার করে খায়। বর্তমানে বিশ্বে অনেক প্রজাতির বাজপাখি দেখা যায়।

    ঈগল এর বৈজ্ঞানিক নাম কি?

    ঈগল একটি শিকারি পাখি। এর আকারে অনেক বড় হয়ে থাকে। শিকারি পাখির মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে ঈগল। ঈগলের বৈজ্ঞানিক নাম Haliaeetus leucocephalus. ঈগল পাখি ঘন জঙ্গলে বসবাস করে।

    বাজপাখি কি কাজে ব্যবহার করা হয়?

    বাজপাখি আকাশের রাজা। এরা মুক্ত ভাবে থাকতে ভালোবাসে। তবে বর্তমান সময়ে বাজপাখি অনেকেই পালন করছে। বাজপাখি পোষ মানাতে পারলে অনেক কাজে আসে। বিশেষ করে বাজপাখি দিয়ে শিকার করানো হয়। যারা সৌখিন মানুষ তারা বাজপাখি পালন করে থাকে। এরা দেখতে যেমন সুন্দর। শিকার করতে তেমন দক্ষ।

    চিল ও বাজ পাখির পার্থক্য:

    চিল ও বাজপাখি মূলত একই প্রজাতির পাখির। এরা শিকারী পাখি। তবে এদের গঠন এবং চলাফেরা অনুযায়ী পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে, চিল ও বাজ পাখির পার্থক্য তুলে ধরা হলো:
    1. চিল বাজপাখির তুলনায় অনেক বড় হয়ে থাকে।
    2. চিলের গতি বাজপাখির তুলনায় অনেক কম।
    3. চিল মানুষের পোষ মানে না কিন্তু বাজপাখি মানুষের পোষ মানে।
    4. বাজপাখির চোখ চিলের তুলনায় অনেক বড়।
    5. চিল স্থির ভাবে আকাশে উড়ে এবং নেমে এসে শিকার ধরে। কিন্তু বাজপাখি অনেক দ্রুত গতিতে শিকার ধরে।

    বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায়:

    বাজপাখি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বাজপাখি পাওয়া যায় আমেরিকায়। তবে বিশ্বের  কিছু কিছু দেশে বাজপাখি পালন করা হয়। বিশেষ করে সৌদি আরব, ডুবাই, পাকিস্তানম, ভারত ইত্যাদি এসব দেশে বাজপাখি পালন করা হয়। বর্তমানে অনেকেই বাজপাখি পালন করতে যায়।


    বাজপাখি পালন করার জন্য বাজপাখি ক্রয় করতে হয়। তবে বাংলাদেশের বাজপাখি পাওয়া যায় না। এর জন্য যারা পশু পাখি ইমপোর্ট করে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে খুব সহজে বাজপাখি পাওয়া যায়।

    বাজ পাখি কি কি খায়?

    বাজপাখি নিজের থেকে ছোট আকারের জীবজন্তু শিকার করে। এবং তারা সেসব খাবারই খায়। বাজপাখি যেসব খাবার খায় সেগুলো হল: মাছ, ছোট ছোট পাখি, কাঁঠবিড়াল, ইঁদুর খায়।। তবে অনেক সময় এরা গরুর মাংস খেয়ে থাকে।

    বাজ পাখির দাম কত?

    বর্তমান সময়ে অনেকেই বাজপাখি পালন করা স্বপ্ন দেখে। এই কারণে বাস পাখির দাম কত জানতে চাই। বাজ পাখির দাম জাত অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। সাধারণ মানের বাজ পাখির দাম ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মত। বিরল প্রজাতির একটি বাজ পাখির  নিলামে ৭৯ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

    বাজপাখি কি অনুগত?

    বাজপাখি নিয়ে আমাদের সকলের মধ্যে কৌতুহল রয়েছে। বাজপাখি একটি ক্ষীপ্রগতি সম্পন্ন শিকারী পাখি। তবে বাজপাখি অনুগত। এদের সঠিক ট্রেনিং দিলে এরা সেই নির্দেশনা অনুযায়ী চলাফেরা করে। বর্তমান সময়ে অনেক দেশের মানুষ বাজপাখি অনুগত করেছে। এবং তার মাধ্যমে তারা শিকার করে থাকে।

    বাজ পাখির প্রজনন:

    বাংলাদেশের একটি বিরল প্রজাতির পাখি হচ্ছে বাজপাখি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাজপাখি পাওয়া যায়। বাজ পাখির প্রজনন সাধারণ পাখির মতোই। বাজপাখি বছরে একবার ডিম পাড়ে। এরা একসাথে তিন থেকে চারটি ডিম দেয়। নারী-পুরুষ উভয় পাখি মিলে ডিমে তাপ দেয়। এখন বাচ্চা দেখাশোনা করে দুজনে মিলেই।

    বাজ পাখির বাসস্থান:

    বাজপাখির বিশ্বের সবচেয়ে বড় আবাসস্থল আমেরিকায়। এছাড়াও এশিয়া মহাদেশ ও বাজপাখির দেখা পাওয়া যায়। বাংলাদেশেও বাজপাখির দেখা মেলে। বাজপাখিরা উঁচু পাহাড়ে এবং গভীর জঙ্গলে বসবাস করে। বর্তমানে এদের বাসা বাড়িতে পালন করা হচ্ছে।

    বাজপাখি কি মাংসাশী নাকি সর্বভোজী:

    বাজপাখি কি মাংসাশী নাকি সর্বভোজী অনেকে জানতে চাই। বাজপাখি মাংসাশী প্রাণী। এরা বিভিন্ন পশু পাখি খেয়ে থাকে। ছোট অবস্থায় পোকামাকড়ক খায়। এরা সব সময় মাংস খেয়েই থাকে।

    কোন রাজ্যে বাজপাখি বেশি:

    বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বাজপাখি পাওয়া যায় আমেরিকায়। তবে শখের বসে বাজপাখি পালন করে সৌদি আরবের মানুষ। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বাজপাখি পালন করা হয়  সৌদি আরব। তারা শিকারের কাজে বাজপাখি পালন কারে। বর্তমানে পাকিস্থান, ভারতের কিছু প্রদেশের মানুষ বাজপাখি পালন করে থাকে।

    লাল লেজ বাজপাখির উচ্চতা কত?

    বাজপাখিদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর জাত হচ্ছে লাল লেজের বাজপাখি। পুরুষ লাল লেজের বাজপাখির উচ্চতা ১৮ থেকে ২৪ ইঞ্চি হয়ে থাকে। এবং নারী লাল লেজের বাজপাখির উচ্চতা ১৯ থেকে ২৬ ইঞ্চি  হয়ে থাকে। এদের দুই ডানা দৈর্ঘ্য ৩ ফুট ৫ ইঞ্চি থেকে ৪ ফুট ৫  ইঞ্চি হয়ে থাকে।

    বাজ পাখির ছবি:

    বাজপাখির বৈশিষ্ট্য এবং বাজপাখি কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে জেনেছি। বাজপাখি দেখতে কেমন আমরা অনেকেই জানিনা। নিম্নে বাজপাখির ছবি দেয়া হল:

    বাজ পাখির ছবি

    শেষ কথা: বাজপাখির বৈশিষ্ট্য, বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায়

    বাজপাখি আমরা না দেখলেও তার সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। কারণ বিশ্বজুড়ে বাজপাখির অনেক খ্যাতি রয়েছে। এরা দেখতে অনেক সুন্দর হয়ে থাকে। তবে খুব সহজে এদের পোষ মানানো যায় না। অনেক দিন ধরে এদেরকে ট্রেনিং করাতে হয়। 

    তারপরে এরা পোষ মানে। বর্তমানে সময় অনেকের বাজপাখি পালন করার শখ রয়েছে। ইচ্ছা করলে বাজপাখি পালন করা যায়। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ