চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয়, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিড অনেক উপকারী। মরুভূমিতে জন্মানো সালভিয়া হিসপানিকা উদ্ভিদের বীজ থেকে চিয়া সিড উৎপন্ন হয়। এই বীজ উৎপন্ন হয় মেক্সিকো, দক্ষিণ-পশ্চিম আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র। চিয়া সিড সাদা এবং কালো রং এর হয়ে থাকে।

চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয়, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয়, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম জানা প্রয়োজন। চিয়া সিড জয়েন্টের ব্যথা, হাড়ের ক্ষয় রোধ, ওজন কমাতে, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। আমাদের অনেকের কাছে চিয়া সিড পরিচিত। 

তবে এর উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ধারণা নেয়। নিম্নে, চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয়, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

    চিয়া সিড কি?

    চিয়া সিড একটি বীজের নাম। চিয়া সিড খাওয়া হয়। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। সর্বপ্রথম চিয়া সিড খাওয়া শুরু করে মায়া এবং অ্যাজটেক জাতির মানুষ। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে শক্তি এবং সাহস বৃদ্ধি পায় তারা মনে করতো। বর্তমানে বিশ্বের সকল দেশের চিয়া সিড খেয়ে থাকে।

    চিয়া সিড দেখতে তোকমার মত। তবে চিয়া সিড তোকমার তুলনায় ছোট হয়ে থাকে। দুইটি বীজের পুষ্টিগুণ একই। চিয়া সিড প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়।

    চিয়া সিড খেলে কি হয়?

    চিয়া সিড খেলে কি হয়? এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে পেশির গঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও জয়েন্টের ব্যথা, হাড়ের ক্ষয় রোধ, ওজন কমাতে, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। চিয়া সিড ওমেগা থ্রি ফ্যাটিক এসিড হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়।


    পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এ কারণে প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চিয়া সিড খাওয়া উত্তম। শরীরের সুগার লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

    চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয়?

    চিয়া সিড স্বাদ ও গন্ধহীন খাবার। চিয়া সিড খাওয়ার জন্য রান্না করার প্রয়োজন পড়ে না। পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাওয়া যায়। ওটস, পুডিং, স্মুথি, জুস ইত্যাদির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। 

    এছাড়াও চাইলে টক দই, রান্না করা সবজি ও সালাতের উপর ছিটিয়ে দিয়ে খাওয়া যায়। যে কোন ভাবে খেলে চিয়া সিড উপকারিতা পাওয়া যায়।

    চিয়া সিড বেশি খেলে কী হয়?

    চিয়া সিড অনেক উপকারী খাদ্য। চিয়া সিড প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে। যার জন্য চিয়া সিড অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে সঠিকভাবে হজম করতে পারে না। যার ফলে পেট ভারে থাকে। পেট ব্যাথা হয় এবং অনেক সময় ডায়রিয়া হতে পারে। তাই কোন সময় চিয়া সিড বেশি খাওয়া যাবে না।

    চিয়া বীজ এবং তোকমা বীজ কি একই?

    চিয়া বীজ এবং তোকমা বীজ নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে। চিয়া বীজ সাদা ও কালো রঙ্গের হয়ে থাকে। এবং এর সাইজ তিলের মত। তোকমা বীজ চিয়া বীজ এর মত দেখতে হলেও চিয়া বীজ অনেক ছোট। দুইটি বীজ দেখতে এবং নাম ভিন্ন হলো গুণগত মান প্রায় একই।

    চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম:

    চিয়া সিড খাওয়ার কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেয়। তবে রাত্রে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখে সকালে মধু দিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও শরবত, তরকারি, সালাত সব জায়গায় চিয়া সিড দিয়ে খাওয়া যায়।তবে খাওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত খাওয়া না পড়ে। অতিরক্ত খেলে পেটের সমস্যা হয়।

    চিয়া সিড খাওয়ার সময়:

    চিয়া সিড খাওয়ার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। তবে কিছু নির্দিষ্ট সময়ে চিয়া সিড খেলে উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বা ঘুমাতে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে। 

    যদি ব্যায়াম করেন তাহলে ব্যায়াম করার এক ঘন্টা পর খেতে হবে। একজন সুস্থ মানুষের সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন চিয়া সিড খাওয়া উচিত। তাহলে শরীরের কোন ধরনের সমস্যা থাকলে সমাধান হয়ে যায়।

    চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা:

    চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয়, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি। চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা অনেক। নিয়মিত চিয়া সিড খেলে অনেক ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নিম্নে, চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
    1. চিয়া সিড প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
    2. চিয়া সিড খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
    3. চিয়া সিড ওমেগা থ্রি ফ্যাটিক এসিড থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
    4. চিয়া সিড খেলে ক্ষতিকর কলেস্টরল কমায়।
    5. শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দূর করে।
    6. শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর করে।
    7. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।

    চিয়া বীজ খেলে কি কি উপকার হয়?

    চিয়া বীজ খেলে কি কি উপকার হয়? উপরে তুলে ধরা হয়েছে। চিয়া বীজ একজন মানুষ সুস্থ থাকার জন্য খাওয়া প্রয়োজন। নিম্নে, চিয়া বীজ খেলে কি কি উপকার হয়? তুলে ধরা হলো:
    1. শরীরের শক্তি ও কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
    2. চিয়া বীজ শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে।
    3. চিয়া সিড খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
    4. চিয়া সিড ওমেগা থ্রি ফ্যাটিক এসিড থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
    5. চিয়া সিড খেলে ক্ষতিকর কলেস্টরল কমায়।
    6. শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দূর করে।
    7. শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর করে।
    8. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।

    চিয়া সিড কিডনির জন্য কতটা ভাল?

    কিডনি আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। কিডনি আমাদের শরীর থেকে বজ্র পদার্থ বের করে দেয় প্রস্রাবের মাধ্যমে। তবে কাজ করার ফলে কিডনি আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে। নিয়মিত চিয়া সিড খেলে কিডনি সমস্যা দূর হয়ে যায়।


    কারণ, চিয়া সিড অনেক উপকারী একটি খাবার। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস হলে কিডনির উপর অনেক চাপ পড়ে। চিয়া সিড খেলে ডায়াবেটিসের সমস্যা ভালো হয়ে যায়। যার ফলে চিয়া সিড কিডনির জন্য অনেক ভালো।

    চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে?

    চিয়া সিড খেলে ওজন কমে। করণ চিয়া সিড রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। যা হজমের সমস্যা দূর করে। এবং শরীরের চর্বি দূর করতে সাহায্য করে। শরীরের মেটাবলিক রেট বাড়াতে সাহায্য করে চিয়া সিড। যা ওজন কমাতে সাহয্য করে।

    ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম:

    চিয়া সিড ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ চিয়া সিড রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে, প্রথমে লেবুর পানি নিতে হবে। 

    লেবুর পানিতে পরিমাণ মত চিয়া সিড রাতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সকালে খালি পেটে লেবুর পানি সহ চিয়া সিড খেতে হবে। এইভাবে দুই থেকে তিন সপ্তাহ খেলে খুব সহজেই ওজন কমবে। তবে প্রতিদিন খেতে হবে।

    চিয়া সিড এর দাম কত?

    চিয়া সিড এর দাম কত? আমরা অনেকেই জানিনা।  বর্তমান সময়ে এক কেজি চিয়া সিড এর দাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। চিয়া সিড মুদির দোকানে পাওয়া যায়। বর্তমানে অনলাইনেও চিয়া সিড পাওয়া যায়।

    চিয়া বীজ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে:

    চিয়া বীজ অনেক উপকারী একটি বীজ। যা খাওয়ার ফলে শরীরের অনেক ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়। অনেকেই জানতে চাই চিয়া বীজ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে নাকি। চিয়া বীজ কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তবে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই অতিরিক্ত চিয়া বীজ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

    চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা:

    প্রত্যেকটি খাবারের উপকারিতা পাশাপাশি অপকারিতা হয়েছে। তবে চিয়া বীজ এর কোন পার্শ্ববর্তী নেয়। এই খাবারটি মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রতিটি মানুষেরই চিয়া বীজ খাওয়া উচিত। তবে সঠিক নিয়মে সঠিক সময় খেতে হবে।


    সঠিক সময় চিয়া বীজ না খেলে অপকারিতার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এবং অনেকে বেশি উপকারের আশায় অতিরিক্ত পরিমাণ চিয়া বীজ খেয়ে  থাকে। যার ফলে পাকস্থলের সমস্যা হয়। এসব কারণে চিয়া বীজ অপকারিতা হয়ে থাকে।

    শেষ কথা: চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয়, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

    চিয়া বীজ সম্পর্কে আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি। চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয়, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। একজন মানুষের শরীরের সকল ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করে চিয়া সিড। তবে অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া যাবে না।

    অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা ও হতে পারে। কোন কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক না। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ