আমরা জানি শরীরের অস্বাভাবিক টিস্যু বা কোষ বৃদ্ধি হলো টিউমার। টিউমার দুই ধরনের। যথা: বেনাইন টিউমার ও ম্যালিগন্যান্ট টিউমার। আজকের আলোচনার বিষয়, বেনাইন টিউমার চেনার উপায়। বেনাইন টিউমার একগুচ্ছ কোষের সমষ্টি যা প্রতিবেশী কোষকে আক্রমণ করতে পারে না।
বেনাইন টিউমার কখনো কখনো খুব বড় আকৃতির হয়ে থাকে। এই টিউমার একবার অপারেশন করলে দ্বিতীয়বার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।শরীরের বাইরের কোন অংশে বেনাইন টিউমার হলে তেমন ঝুঁকি নেই। তবে বেনাইন টিউমার যদি মস্তিষ্কে হয় তাহলে জীবনের ঝুঁকি থাকে।
কারণ, মস্তিষ্ক মানুষের জটিলত অঙ্গ। এই জায়গায় টিউমার হলে অপারেশন করতে সমস্যা হয়।বেলাইন টিউমারের কোষ বিভাজন স্বাভাবিক হওয়ার ফলে এই টিউমারের ঝুঁকি খুব কম।
বিনাইন টিউমার কি?
যে টিউমার শরীরের এক জায়গায় সৃষ্টি হয়ে এক জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে সেই টিউমারকে বেনাইন টিউমার বলে। এই টিউমার মানব দেহের জন্য তেমন ক্ষতিকর না।
টিউমার কত প্রকার?
টিউমার একটি পরিচিত রোগ। তবে টিউমার কত প্রকার সেটা আমরা সঠিক জানিনা। টিউমার সাধারণত দুই প্রকার। একটি হলো বিনাইন টিউমার, অপরটি হল ম্যালিগন্যান্ট টিউমার। বিনাইন টিউমার এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নাই।
আরও পড়ুনঃ গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তির উপায়
তবে ম্যালিগণ্যান্ট টিউমার ক্যান্সারের সৃষ্টিকারী ভাইরাস বহন করে। এই কারণে।, ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হলে অনেক বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়।
বিনাইন টিউমার কেন হয়?
বিনাইন টিউমার আমাদের কমবেশি সকলের কাছে পরিচিত। কারণ, আমাদের পরিবারের কারো না কারো টিউমার হয়েছে। পরিবারের কারো না হলেও প্রতিবেশীর হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা টিউমারের সাথে পরিচিত।
সাধারণত বিনাইন টিউমার মানব দেহে বেশি হয়ে থাকে।বিনাইন টিউমার কেন হয় সেই সম্পর্কে আমাদের অনেকেই ধারণা নেই। টিউমার সাধারণত হয় কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে। কোষে কোন ধরনের ভাইরাস অথবা হরমোন জনিত সমস্যার কারণে শরীরের নির্দিষ্ট স্থানের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে।
সাধারণত এই অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধির কারণে বিনাইন টিউমার হয়ে থাকে। এই টিউমারের তেমন কোনো ঝুঁকি নেই। অপারেশন করলে খুব সহজেই ভালো হয়ে যায়।
টিউমার দেখতে কেমন হয়?
টিউমার সাধারণত দেখতে ফোঁড়ার মতো। তবে টিউমারের আকার ফোঁড়ার থেকে বড়।অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে আমরা খুব সহজেই টিউমার সনাক্ত করতে পারি। কিন্তু আমাদের দেহের ভেতরে টিউমার হলে আমরা সেটা সনাক্ত করতে পারি না। যেমন, ব্রেন টিউমার, স্তন টিউমার, পাকস্থলী টিউমার, কিডনি টিউমার।
আরও পড়ুনঃ সিস্ট কি টিউমার, ওভারিয়ান সিস্ট দূর করার উপায়
এসব টিউমার বাহির থেকে দেখা যায় না। তবে টিউমার গুলো হলে শরীরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। এবং রোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
বিনাইন টিউমার চেনার উপায়
বিনাইন টিউমার সাধারণত আমাদের সকলের কাছে পরিচিত। বিনাইন টিউমার চেনার কিছু সাধারণ উপায় রয়েছে। নিম্নে, বিনাইন টিউমার চেনার উপায় তুলে ধরা হলো:
- বিনাইন টিউমার একটিমাত্র আবরণ দ্বারা আবৃত থাকবে।
- এটা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাবে।
- এটা শরীরের যে স্থানে হবে সেই স্থানে থাকবে।
- ভেতরের অংশটা শক্ত হয়ে থাকবে।
- একবার অপারেশন করলে আর হওয়া সম্ভাবনা থাকে না।
কি খেলে টিউমার ভালো হয়?
আমরা যে সকল খাবার খাই তার মাধ্যমে আমাদের শরীরের শক্তি উৎপন্ন হয়। এর সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রতিটি খাবারের রয়েছে নির্দিষ্ট পুষ্টিগুণ। যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। পরিবর্তন সময়ে মেডিসিনের মাধ্যমে সকল রোগের চিকিৎসা করা হয়।
ঠিক একই ভাবে টিউমারের চিকিৎসাও মেডিসিন এর মাধ্যমে করা হয়। তবে টিউমার থেকে বাঁচার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে পারি। এতে করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। চলুন জেনে নেই কি কি খাবার খেলে টিউমার থেকে বাঁচা যায়।
- শসা
- লেবু
- মাশরুম
- পাতাযুক্ত শাকসবজি
- মাছ
- হলুদ
- দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার কী?
টিউমার দুই প্রকার। একটি হল বিনাইন টিউমার এবং অপরটি ম্যালিগন্যান্ট টিউমার। ম্যালিগন্যান্ট টিউমার খুব ভয়ংকর। কারণ এই টিউমারের সাথে ক্যান্সারের ভাইরাস থাকে। যার কারণে এই টিউমার হলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
আরও পড়ুনঃ জন্ডিস কেন হয়, জন্ডিসের কারণ ও লক্ষণ
ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের ভেতরে থাকা অস্বাভাবিক কোষগুলো রক্তের সাহায্যে শরীরে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। যেসব স্থানে ছড়িয়ে পড়ে সেই সব স্থানে নতুন করে টিউমারের সৃষ্টি হয়। এবং টিউমার আক্রান্ত স্থানে ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার লক্ষণ?
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বর্তমানে সকলের কাছেই পরিচিত। তবে এই টিউমারের কিছু লক্ষণ রয়েছে। যা থেকে আমরা খুব সহজে বুঝতে পারি ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হয়েছে। চলুন জেনে নেই, ম্যালিগন্যান্ট টিউমার লক্ষণ গুলো কি কি
- হঠাৎ করে শরীরের একটি অংশ ফুঁলে যাওয়া।
- ফুঁলা স্থান শক্ত এবং ব্যথা হওয়া।
- হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া।
- খাবারের রুচি কমে যাওয়া।
- এক স্থান থেকে টিউমার অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়া।
- একবার অপশন করলে পুনরায় আবার হওয়া।
টিউমার মানব দেহের কোন স্থানে হয়?
কোষের অস্বাভাবিক স্থির কারণে টিউমার হয়। টিউমার আমাদের সকলের কাছে একটি পরিচিত রোগ। টিউমার মানব দেহের সব অঙ্গে হয়ে থাকে। যে যে স্থানে টিউমার হয় নিম্নে তুলে ধরা হলো:
- শরীরের বাইরের অংশে টিউমার
- ব্রেন টিউমার
- পাকস্থলীতে টিউমার
- জরায়ু টিউমার
- স্তন টিউমার
- কিডনি টিউমার
শেষ কথা: বিনাইন টিউমার চেনার উপায়
টিউমার একটি সাধারণ রোগ। তবে বর্তমান সময়ে টিউমারের বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। বিশেষ করে বিনাইন টিউমার বেশি হয়। তবেই টিউমারের কোনো প্রান ঝুঁকি থাকে না। তবে সাবধানতা অবলম্বন করলে টিউমার থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাব।
উপরের লেখাটি সম্পূর্ণ পড়লে বিনাইন টিউমার চেনার উপায় সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। লেথার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পন্ন লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধ্যনবাদ।
0 মন্তব্যসমূহ